ডেস্ক নিউজ
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনার টিকা প্রদান ও এ-সংক্রান্ত কাজে ৪৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ৩০ হাজার মানুষকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হয়েছে। অনেক দেশেই বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হয়নি। তারা টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছে। অথচ আমরা দেশের মানুষকে বিনামূল্যে টিকা দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে কুমিল্লা ও এর আশপাশের ছয় জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য স্থাপনা ও প্রান্তিক পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবাকে কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সরকার সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে। করোনা মহামারিতে এই চেষ্টা কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। ইউনিয়ন থেকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্যক্রম মনিটরিংয়ে রাখা হয়েছে। মেশিন, লোকবল ঠিক আছে কিনা, মানুষ সেবা পাচ্ছে কিনা, সেগুলো দেখা হচ্ছে।
সাধারণ মানুষ ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছে কিনা, সেটি নিশ্চিতে হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের মাসিক সভা নিয়মিত করার তাগিদ দিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, জনপ্রতিনিধি ও হাসপাতাল প্রধানের অনেক দায়িত্ব। ডাক্তার-নার্স ঠিকমতো আসে কিনা, সেটি দেখতে হবে। বেড ও টয়লেট ঝকঝকে থাকতে হবে। তবেই আন্তর্জাতিক মানের সেবার পরিবেশ ঠিক থাকবে। আর এটি যাতে ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, সেটি দেখার দায়িত্ব পর্ষদের।
মন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। সেখানে ৩০-৩২ ধরনের ওষুধ পাচ্ছেন রোগীরা। বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে এখন দেড় লাখ শয্যা রয়েছে। প্রতিটি বড় হাসপাতালে আইসিইউ আছে। পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণের হার যেটি একসময় দুই ভাগও ছিল না, এখন তা ৬৫ শতাংশ। আমাদের অবকাঠামো উন্নয়ন অনেক হয়েছে। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালেও সেবার মান বেড়েছে। ব্রেইন টিউমার, বাইপাস সার্জারির মতো রোগের অপারেশন দেশেই হচ্ছে। কোনো ওষুধের অভাব নেই। তিনি বলেন, কুমিল্লাতেই আইসিইউ, আরটিপিসিআরসহ জিন এপপার্ট মেশিন দেওয়া হয়েছে। ফলে সব ধরনের জরুরি সেবা এখন জেলাতেই মিলবে। ঢাকায় কষ্ট করে যেতে হবে না।
কুমিল্লা জেলার একজন সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, বুড়িচং উপজেলায় এপ-রে মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি দেওয়া হবে। মানুষ সেবা পাচ্ছে কিনা, সেটি দেখার জন্য মাসিক যে কমিটি আছে, সেটি ঠিকমতো করতে হবে। সরকারপ্রধান চান, মানুষ যাতে চাহিদা অনুযায়ী সেবা পায়।
এ সময় কুমিল্লা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ জানান, তাঁর দুই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যন্ত্র আছে, কিন্তু জনবল নেই। কনসালট্যান্টরা থাকেন না। এসব সংকটে মানুষকে সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। দ্রুত এগুলোর ব্যবস্থা করা দরকার।
এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতির অভাব নেই; কিন্তু জনবলের অভাব রযেছে। তবে গত ৫০ বছরে যেখানে ১৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ হয়েছে, করোনার দুই বছরে সেটি তিন গুণ বেড়েছে। নার্সও দ্বিগুণ হয়েছে। আমরা কাজ করেছি বলেই স্বাস্থ্যসেবা এগিয়ে গেছে। আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি, মাঠে নেমেছি। যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার, তা অবশ্যই নেওয়া হবে।