ডেস্ক নিউজ
সড়ক যোগাযোগ, কর্মসংস্থান সব ক্ষেত্রে উন্নয়নে ফিরেছে রাজশাহী। গত এক দশকে রাজশাহীজুড়ে চলছে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ। বড় বড় প্রকল্পের মাধ্যমে এসব কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কর্মসংস্থানের জন্য রাজশাহীতে গড়ে তোলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক ও সিলিকন সিটি। কাজ চলছে বিসিক-২ প্রকল্প ও চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকার। আগামী বছরের জুনে বড় প্রকল্পগুলো দৃশ্যমান হওয়ার কথা আছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে গত এক দশকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নতুন রেকর্ড গড়েছে। প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ শেষ করেছে প্রথম ফ্লাইওভার। ২৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরীর বিলসিমলা রেলক্রসিং থেকে কাশিয়াডাঙ্গা মোড় পর্যন্ত বাইসাইকেল লেনসহ সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ চলছে। বর্তমানে রাস্তার দুই পাশে ড্রেন নির্মাণ এবং বর্ধিত রাস্তার নির্মাণ কাজ চলছে। ২৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০ ফুট প্রশস্ত রাস্তাটি ৮০ ফুটে উন্নীত করা হচ্ছে। রাখা হয়েছে ড্রেন, ফুটপাথ, সড়ক ডিভাইডারসহ সাইকেল লেন। ১২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘রাজশাহী মহানগরীর উপশহর মোড় থেকে সোনাদীঘি মোড় ও মালোপাড়া মোড় থেকে সাগরপাড়া মোড় পর্যস্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন কাজ চলছে। রাজশাহী-নওগাঁ সড়ক থেকে রাজশাহী-নাটোর সড়ক পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ, রাজশাহীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণে নর্দমা নির্মাণ প্রকল্প (তৃতীয় পর্যায়), কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারী মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পে এবং রাজশাহীর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। নগরীর যানজট নিরসনে ১৩২ কিলোমিটারের বেশি নতুন সড়ক নির্মাণ ও বিদ্যমান সড়ক প্রশস্ত করার কাজ চলছে। এ ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্পের আওতায় ৪৯ কিলোমিটারের বেশি পাকা ড্রেনেজ নির্মাণ করা হচ্ছে। পথচারীদের চলাচলের জন্য সাড়ে ১৯ কিলোমিটার ফুটপাথ করা হচ্ছে এবং নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে সড়কের পাশে দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। রাসিক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন জানান, ৯৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরীর উৎসব সিনেমা হল থেকে তালাইমারী পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ প্রকল্প, ২০৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে অবস্থিত ২ একর আয়তনের ১৭টি প্রাকৃতিক জলাধার ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ, জলাধারের চারপাশে সৌন্দর্যবর্ধক কাঠামো নির্মাণসহ অন্যান্য কাঠামো নির্মাণ, ৮০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে শহীদ জিয়া শিশু পার্ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন এবং ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর গ্রেটার রোড থেকে নওদাপাড়া পর্যন্ত সড়কটির পাশে ১০ একর এলাকা নিয়ে ওয়াটার পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
মেয়র বলেন, আগামী চার বছরের মধ্যে প্রকল্পগুলো দৃশ্যমান হয়ে যাবে। এখনই নগরী অনেকটা বদলে গেছে। তখন আরও বেশি বদলে যাবে।
রাজশাহীতে প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হচ্ছে নান্দনিক ‘বঙ্গবন্ধু স্কয়ার’। পুরোদমে চলছে কাজ। আগামী বছরের জুনে নির্মাণকাজ শেষ হবে- আশা রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ)। এটি নির্মাণ করা হচ্ছে নগরীর প্রবেশপথ তালাইমারী এলাকায়। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) প্রকল্প পরিচালক শেখ কামরুজ্জামান জানান, বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে থাকবে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, করা হবে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ। পাশাপাশি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন, দর্শন ও সুদূরপ্রসারী ভাবনা সম্পর্কে ধারণা মিলবে। থাকবে চিলেকোঠাও। দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করতে রাত-দিন কাজ করছেন শ্রমিকরা। এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ২৮ লাখ ৭ হাজার টাকা।
উচ্চমাত্রার আলোয় এখন উদ্ভাসিত রাতের রাজশাহী। নগরীর প্রশস্ত রাস্তাগুলো এখন আলোয় ঝলমল। গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে বসানো হয়েছে আধুনিক আলোক পোস্ট। যা একদিকে রাতের শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে, অন্যদিকে নগরবাসীকে দিচ্ছে নিরাপত্তা। সুউচ্চ মাস্তুল আকৃতির মজবুত পোলের ওপর রিং বসিয়ে তার চতুর্দিকে উচ্চমানের এলইডি লাইট বসানো হয়েছে। এই আলোকায়নকে বলা হচ্ছে ‘হাইমাস্ট’। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ১৬টি মোড়ে বসানো হয়েছে হাইমাস্ট বাল্ব।