ডেস্ক নিউজ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা গ্রাম হবে শহর। প্রতিটি গ্রামেই পৌঁছে যাবে সকল নাগরিক সুবিধা। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার সফল বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে মাদারিপুরের কালকিনি উপজেলায়। প্রয়োজনীয় সেবা পেতে যেন আর মানুষকে নগরমুখি হতে না হয় সেজন্য কালকিনিতে রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন ধরণের প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও আধুনিকায়ন করা হয়েছে।
সর্বশেষ কালকিনির রমজানপুর ইউনিয়নে নির্মাণ হচ্ছে ৫০ শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল কমপ্লেক্স। এর মধ্যে দিয়ে উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষ বাড়ির কাছেই পৌঁছে পাবে আধুনিক চিকিৎসা সেবা।
মাদারীপুর জেলা সদর থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে কালকিনি উপজেলার অবস্থান। উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে প্রায় তিন লাখ মানুষের বাস। এ বিপুল জনগোষ্ঠীর যে কারো সুচিকিৎসার জন্য ছুটতে হয় জেলা সদরে। সাধারণ একটি অস্ত্রপাচারের দরকার পড়লেও যেতে হয় জেলা সদরে। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে উদ্যোগ নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ। তাঁর বিশেষ অনুরোধে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে রমজানপুরে ৫০ শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের অনুমতি দেয় সরকার।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ কালের কণ্ঠকে জানান, অজপাড়া গায়ে একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের ব্যবস্থা করা মোটেও সহজ কাজ ছিল না। হাসপাতালের বেশির ভাগ জমিই আমাদের পরিবারের। তাদের সবাইকে রাজি করিয়ে আমরা হাসপাতালের জন্য জমি দান করি। এর বাইরে কিছু জমি অন্যদের ছিলো। সেগুলো আমরা কিনে নিয়ে সরকারকে দান করে হাসপাতাল নির্মাণের ব্যবস্থা করি। বাংলাদেশে মাত্র দুইটি ইসলামিক মিশন হাসপাতালের অনুমতি দেয় সরকার। এর একটি স্থাপন হচ্ছে কালকিনির রমজানপুরে।
রমজানপুর ইউনিয়নেই অন্তত ২৫ হাজার লোকের বাস। কয়েক বছর আগেও চলাচলের জন্য ভাল রাস্তা ছিল না মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রমজানপুর ইউনিয়নে। সেখানে এ হাসপাতাল নির্মাণের ফলে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ উচ্ছ্বসিত।
রমজানপুর ইউপি চেয়ারম্যান বি এম মিল্টন ইব্রাহীম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বর্তমানে এই এলাকার মানুষদের চিকিৎসা সেবা পেতে দূরে যেতে হয়। হাসপাতাল কমপ্লেক্সটি নির্মাণ শেষ হলে এলাকার মানুষসহ আশেপাশের জনগণের চিকিৎসা সেবা অনেক সহজ হবে। ’
নির্মাণাধীন এই হাসপাতাল কমপ্লেক্সে ৫০ শয্যার চিকিৎসা ভবন ছাড়াও স্টাফ কোয়ার্টার, নার্স ডরমেটরি, কনসালটেন্ট ডরমেটরি, ওয়ার্ড বয় ডরমেটরি, ডিরেক্টর ডরমেটরি, বিদ্যুতের সাবস্টেশন বিল্ডিং, মসজিদসহ আরো কয়েকটি স্থাপনা। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৩১ কোটি ৬ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে এ হাসপাতাল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ। আগামী জুন জুলাইয়ের মধ্যেই এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
জানতে চাইলে রমজানপুর ইসলামিক মিশন হাসপাতাল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বদরুল আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রকল্পের বেশির ভাগ কাজই শেষ হয়ে গেছে। মূল ভবন নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। অন্যান্য কাজগুলো শেষ হলে এবং প্রয়োজনীয় জনবল বরাদ্দ পেলে জুন-জুলাইয়ের মধ্যেই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু করা যাবে।
ডা. বদরুল আহসান বলেন, এটি একটি আধুনিক হাসপাতাল হচ্ছে। এখানে বহিবির্ভাগ সেবা ছাড়াও অস্ত্রপাচারের ব্যবস্থা থাকছে। বিশেষায়িত অস্ত্রপাচার ছাড়া অন্য সাধারণ অস্ত্রপাচার এই হাসপাতালেই করা যাবে। প্রসূতিরাও আধুনিক সেবা পাবে এ হাসপাতালে।