নিউজ ডেস্ক:
বিশৃঙ্খল বিএনপি দিনে দিনে আরও বিশৃঙ্খল হয়ে উঠছে। সঙ্গে বাড়ছে দলের ভেতরে পক্ষ-বিপক্ষ। এতে অনেক সময় সিনিয়র নেতারা লাঞ্ছিত হচ্ছেন জুনিয়রদের দ্বারা।
সম্প্রতি ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ বিএনপি নেতাদের লাঞ্ছনার রেষ কাটতে না কাটতেই লাঞ্ছিত হলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল বাসিদ আঞ্জু। বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিতে গিয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে বজলুল বাসিদ আঞ্জুর পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলেন প্রতিপক্ষ নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, ১ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়ার মাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই বজলুলকে লাঞ্ছিত করার ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে রাজনীতিতে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দলীয় কোন্দলের ভিডিওতে দেখা যায় নেতা-কর্মীরা বজলুলকে ঘিরে মারধর করছেন। এক পর্যায়ে তার গায়ের পাঞ্জাবিটি ছিঁড়ে যায়। এরপর তাকে খালি গায়ে হেঁটে চলে যেতে দেখা যায়। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক বিএনপি নেতা ভিডিও করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। ভিডিও করার সময় বজলুলকে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।
এমন প্রেক্ষাপটে অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে, কি কারণে ঢাকা উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির মতো এমন একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে এভাবে লাঞ্ছিত করা হলো? আর কেনই বা তিনি সেখান থেকে পালিয়ে গেলেন?
সূত্র বলছে, কর্মীদের আক্রোশের জেরেই লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন আঞ্জু। তার বিরুদ্ধে কমিটির মনোনয়ন বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি, দলীয় ফান্ড আত্মসাতের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বিএনপির পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে জামায়াতের কর্মীদের ঢাকা উত্তরের বিভিন্ন ইউনিটের কমিটিগুলোতে মনোনয়ন দিয়েছেন বজলুল। তার অপকর্মের কারণে নগরের এই ইউনিটের নেতাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ বিরাজ করছিলো। যার বিস্ফোরণ ঘটলো প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে। আঞ্জু যখন লাঞ্ছিত হন তখন ঢাকা উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান ও যুগ্ম সম্পাদক এ জি এম শামসুল ইসলামকেও ধাওয়া করে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে দৌড়ে পালিয়ে যান তারা।
এদিকে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদলের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিক্ষুব্ধদের প্রধান টার্গেট ছিলো সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, যুগ্ম সম্পাদক এ জি এম শামসুল ইসলাম ও দফতর সম্পাদক এ বি এম রাজ্জাকের দিকে। তবে তারা পালিয়ে যাওয়ায় সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এই আক্রোশের প্রধান টার্গেটে পরিণত হয়েছে। তাকে কিল, ঘুষি, লাথি মারা ছাড়াও তার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলা হয়। পরে তিনিও দৌড়ে পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে মুন্সি বজলুল বাসিদ আঞ্জুর বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। বাসায় যোগাযোগ করতে গেলেও তিনি দেখা করতে রাজি হননি।