করোনায় বিদেশি অভিবাসী ৭০ থেকে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সংসদে আইন পাশ এবং অভিবাসন ইস্যুতে কোটা পদ্ধতির প্রচলনের ভাবনা।
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রাণালয় বলছে কোনও প্রভাব পড়বে না। ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা চলছে।
কুয়েতে অভিবাসন বিরোধী অবস্থানে যেকজন সাংসদ সক্রিয় তাদের মধ্যে সাফাহ আল হাশেম, অভিবাসীদের সুবিধাবাদী ব্যাকটেরিয়া উল্লেখ করে গত বছরই অভিবাসী বিতাড়নের প্রস্তাব দেন।
চলতি বছর জুলাইয়ে করোনায় বিদেশি অভিবাসী ৭০ থেকে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সংসদে আইনও পাশ করে দেশটি। ফলে চাপে পড়েছে সে দেশে অবস্থান করা ৬ লাখ বাংলাদেশি।
নতুন পাস হওয়া আইনে- দেশটিতে ভারতীয় অভিবাসীর সংখ্যা ১৫ শতাংশ করা হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা ৫ শতাংশের ওপরে যেতে পারবে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, শ্রমিকরা যে ধরনের কাজ করে আমার ধারনা এ ধরনের কাজ কুয়েতি বলেন আমিরাতি বলেন সৌদি বলেন ওরা খুব করবে না। তখন আমাদের লোকই তারা নেবে। তবে এটুুকুু ঠিক যে আগামিতে আমরা যেহারে লোক পাঠাচ্ছিলাম সেইটার অবস্থান হয়তো পরিবর্তন হবে।
পেট্রোলিয়াম নির্ভর কুয়েতের মোট জনসংখ্যার ৪৮ লাখের মধ্যে ৩৪ লাখই অভিবাসী। করোনা সংক্রমণের মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার কর্মী দেশে ফেরত এলেও করোনা মহামারীর মধ্যে মার্চ পর্যন্ত গেছে মাত্র ১৭ শ কর্মী।
তবে পার্শবতী দেশগুলোর চেয়ে দক্ষ কর্মী তৈরীতে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকায় বাংলাদেশই বেশি কর্মী ছাঁটাইয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।
সাবেক আইওএম কর্মকর্তা আসিফ মুনীর বলেন, অন্যান্য যেসব দেশ থেকে শ্রমিকরা মধ্যপ্রাচের দেশগুলোতে যায় সেখানে ভাষাগত দক্ষতা, কারিগরি দক্ষতা বাংলাদেশিদের থেকে অনেক বেশি থাকে। ভবিষ্যতে কোন ধরনের কাজের প্রয়োজনিয়তা বেশি থাকবে সেই প্রস্তুতি নিয়ে যদি আমরা কথা বলি তাহলে কিন্তু নেগোশিয়েট করতে সুবিধা হবে। শুধুমাত্র আমাদের কোটা বাড়ানোর কথা বলে কিন্তু আমরা এক ধরনের দূর্বলতাই প্রকাশ পাবে।
তবে কোটা সিস্টেমে এখনি শ্রমিক ছাঁটাই হবে না বলে মনে করছে বাংলাদেশ দূতাবাস। বরং কুয়েতে বিদেশি অভিবাসীর সংখ্যা কত তা হিসেব করে ১ বছরের মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে কি পরিমাণ কর্মী লাগবে তার পরিকল্পনা নির্ধারণ করবে কুয়েত।
রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান বলেন, তাদেরকে ১ বছরের একটা সময় দেয়া হয়েছে এই সময়ের মধ্যে তারা নির্ধারন করবে যে এই দেশে কত অভিবাসি থাকতে পারবে। ১ বছরের মধ্যে তারা একটা প্ল্যান দিবে তার মানে এই না যে তারা কালকে থেকেই ফেরত পাঠাবে বিষয়টি তা না।
করোনা মহামারির কারণে মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশগুলো আর্থিকভাবে ঝুঁকির মুখে পড়ায় নতুন শ্রমবাজার খোঁজার পরামর্শ দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।