ডেস্ক নিউজ
স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ সালের বাজেটে উন্নয়ন বরাদ্দ ছিল ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে মাত্র ১০১ কোটি টাকা ছিল কৃষি উন্নয়নের জন্য। এর প্রায় ৫০ বছর পর চলতি (২০২২-২৩) বছরে এ খাতের বরাদ্দ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা, যা ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের বরাদ্দের শতগুণ।
গত অর্থবছরে (২০২১-২২) ধান উৎপাদনের টার্গেট (লক্ষ্যমাত্রা) ছিল ৩৯৮.৮১ লাখ টন। উৎপাদন হয়েছিল ৪০৪.৯১ লাখ টন। অর্থাৎ টার্গেটের চেয়ে প্রায় ৭ লাখ টন বেশি ফলন হয়েছিল ধানে। প্রায় অভিন্ন চিত্র দেশের পাট, আম, পেয়ারা ও আলুসহ বিভিন্ন ফসল ও ফল উৎপাদনে। আর এভাবেই দিনদিন বাড়ছে দেশের খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন। দেশের এমন অবস্থায় ‘কাউকে পশ্চাতে রেখে নয়, ভালো উৎপাদনে উত্তম পুষ্টি, সুরক্ষিত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২২’। প্রতিবছরের মতো এ বছরও কৃষি মন্ত্রণালয় দিবসটি উদযাপনের জন্য নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তবে তা আজকের পরিবর্তে কাল ১৭ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস পালন করবে এ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘১৭ তারিখ সকাল ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব খাদ্য দিবসের মূল অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরী, এফএওর বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন প্রমুখ উপস্থিত থাকবেন। এরপর দুপুর ১২টায় একই স্থানে কারিগরি সেশন/সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।’
বিশ্ব খাদ্য দিবসে গতকাল এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি মোকাবিলায় কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। কৃষির গুরুত্ব অনুধাবন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্যস্বাধীন দেশ পুনর্গঠনে কৃষি বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু কৃষির উন্নয়নে কৃষকদের মাঝে খাস জমি বিতরণ, ভর্তুকি মূল্যে সার, কীটনাশক, উন্নত বীজ, সেচ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারের যুগোপযোগী নীতি ও পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ফসলের পাশাপাশি প্রাণিজ আমিষ খাতেও ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল তাঁর বাণীতে বলেছেন, সরকারের গৃহীত কৃষিবান্ধব নীতি ও কার্যক্রমে দানাদার খাদ্য, মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং দুগ্ধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দ্বারপ্রান্তে। ধান, পাট, আম, পেয়ারা আলু প্রভৃতি ফসল ও ফল উৎপাদনে বাংলাদেশ শীর্ষ ৮টি দেশের মধ্যে রয়েছে। কৃষির উন্নয়নে এ সাফল্য সারা বিশ্বে বহুলভাবে প্রশংসিত ও নন্দিত হচ্ছে। নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতসহ কৃষিপণ্যের রপ্তানি বাড়াতে উত্তম কৃষিচর্চা নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্থাপন করা হয়েছে অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব ও আধুনিক প্যাকিং হাউস।