প্রশাসনের এতো হুশিয়ারীর পরেও কোন ক্ষমতার বলে এখনো প্রকাশ্যে মাথা উচু করে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে নাটোরের স্রোতি জাল সন্ত্রাসীরা। স্রোতি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ সহ নানা ধরনের নির্দেশনা দিলেও এখনো প্রকাশ্যে চলছে অবৈধ স্রোতি জাল দিয়ে মাছ শিকার। স্রোতি জাল দিয়ে মাছ ধরার ফলে নাটোরের সিংড়া,গুরুদাসপুর ও নলডাঙ্গায় দিত্বীয়বারের মত বন্যা দেখা দেয়। এই মানব সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয় প্রায় তিন হাজার হেক্টর কৃষি জমি, প্রায় দেড় হাজার মাছ ভর্তি পুকুর ও মানুষের বসত ভিটা। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের এই সকল অবৈধ স্রোতি জাল দিয়ে মাছ শিকারের ফলে এতো ক্ষয়ক্ষতির পরও কোন সাধারন মানুষ কথা বলার সাহস পাচ্ছেনা। আর সিংড়ায় বন্যায় মানুষের এতো ক্ষয়ক্ষতির পর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এই সকল সন্ত্রাসীদের নাম দেন স্রোতি সন্ত্রাসী।
তিনি বলেন যারা এই সকল স্রোতি জাল দিয়ে মানুষের ক্ষতি করছে তাদের কোন ধরনের ক্ষমা করা হবেনা। তিনি আরো বলেন এই অবৈধ স্রোতিজাল ব্যবসার সাথে যদি আওয়ামীলীগের কোন নেতা কর্মি জড়িত থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা বাদের সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। প্রতিমন্ত্রী নিজে নাটোরের জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ ,পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ও সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানুকে সাথে নিয়ে আত্রাই নদী থেকে অবৈধ স্রোতি জাল উচ্ছেদে নামে। সেই সময় তারা দুইটি স্রোতি জাল উচ্ছেদ করলেও এখনো বাঁকী রয়েছে প্রায় ৭০ টি অবৈধ স্রোতি জাল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার অনেক মানুষ বলেন, স্রোতি জাল নিয়ে কোন কথা বলা যায়না। এই সকল স্রোতি জালগুলো দিয়ে মাছ শিকারের সাথে রয়েছে প্রতিমন্ত্রী পলকের ঘনিষ্টজনরা। সিংড়ার সবগুলো অবৈধ স্রোতি জালের ব্যবসার সাথে জড়িত এলাকার মেয়র ,চেয়ারম্যান সহ আওয়ামীলীগের নেতারা। তারা ক্ষমতাবান হওয়ায় তাদের প্রতিবছরই এই যন্ত্রনা সহ্য করতে হয়। তারা অভিযোগ করে বলেন প্রতিমন্ত্রী হয়তো এগেুলোর সবই জানেন। তিনি প্রকাশ্যে অবৈধ স্রোতিজাল তোলার তথা বললেও তিনি আসলে চায়না এই জাল উচ্ছেদ করতে। এলাকাবাসীরা আরো বলেন, একজন প্রতিমন্ত্রী বা জেলা প্রশাসন চাইলে একদিনের মধ্যে সব অবৈধ জাল উচ্ছেদ করা সম্ভব। এছাড়াও এই জালের ব্যবহারের সাথে যারা জড়িত তাদের সকলকেই গ্রেফতার করে আইনরে আওতায় আনতে পারেন। কিন্তু প্রশাসন তা করেনা। প্রতিবছর যখন বন্যায় গ্রামবাসী ক্ষতিগ্রস্থ হয় সেই সময় প্রশাসনের মানুষজন এসে কয়েকবার মানুষ দেখানো অভিযান করে চলে যায়।
এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সিংড়ায় অবৈধ স্রোতি জাল স্থাপনকারী আওয়ামী লীগের দলীয় কোন পদে থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। প্রকৃতি সৃষ্ট কারন ছাড়াও অবৈধ মাছ শিকারে নদীতে আড়াআড়ি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে স্রোতি জাল স্থাপনের কারনে নদীর পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হয়ে পানির প্রবল চাপে বাঁধ ভেঙে বিল প্লাবিত হয়েছে। অবৈধ স্রোতি জাল স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে এবং স্রেতি জাল অপসারণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এই কার্যক্রমকে আরো বেগবান করা হবে।