প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে রাজধানীতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান। ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ টাকা, মদসহ ক্যাসিনোর বিভিন্ন সরঞ্জাম। অভিযানে আটক হয়েছে অনেক ক্যাসিনো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান। যাদের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ছাড়াও অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন অপকর্ম ও চাঁদাবাজির। আটকের পর তাদেরকে ইতোমধ্যে বহিস্কৃত করা হয়েছে স্ব-স্ব সংগঠন থেকে। সম্প্রতি কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঢাকা ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে।
এদিকে চলমান ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের উপর পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষই এতে সন্তুষ্ট। ৫৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন, অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্যের সঙ্গে বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা সরাসরি জড়িত থাকেন। আর ৯৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারীই মনে করেন, শেখ হাসিনাই দেশকে সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত করতে পারবেন। ৮৮ শতাংশ মানুষ বলেছেন, এই অভিযানের মাধ্যমে সরকার ও আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। ১৮ শতাংশ মনে করেন, মোটামুটি দুর্নীতিমুক্ত হবে। এক শতাংশ মনে করেন, পারবেন না। ৪ শতাংশ বলেছেন, অভিযানে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ৮ শতাংশ বলেছেন, এই অভিযানের কোনো প্রভাব পড়বে না।
এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ ইন্টারন্যাশনাল। চলমান ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান সর্ম্পকে পরিচালিত জনমত জরিপের ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষ্যে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মিল্টন। অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মিল্টন জানান, চলতি বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের আটটি বিভাগের প্রায় তিন হাজার মানুষের মোবাইলে ফোন করে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান সর্ম্পকে কিছু প্রশ্ন করা হলে এক হাজার ৭৬০ জন মানুষ তাদের মতামত দিয়েছেন।
জরিপে অংশ নেওয়া ৯৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারী দেশ পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রীর ওপর সন্তুষ্ট। এদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ খুব বেশি সন্তুষ্ট, ২৪ শতাংশ মোটামুটি সন্তুষ্ট এবং এক শতাংশ অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। জরিপে অংশ নিয়ে ৮৪ শতাংশ উত্তরদাতা দেশে বৈধভাবে ক্যাসিনোর লাইসেন্স দেওয়ার বিরোধীতা করেছেন, ১১ শতাংশ নির্দিষ্ট এলাকায় দেওয়ার পক্ষে এবং ৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী ক্যাসিনো বৈধ করার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। ৫৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন, অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্যের সঙ্গে বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা সরাসরি জড়িত থাকেন। ৩৪ শতাংশ উত্তরদাতার মতে, এসব নেতারা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকেন।