ডেস্ক নিউজ
খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে গবেষণায় ‘বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)’ বিশ্বে ১৬তম, এশিয়ায় দ্বিতীয়তম ও দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। সারা বিশ্বে খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে এমন ৬৮টি গবেষণা ও নীতিনির্ধারক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পরিচালিত এক জরিপে সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লডার ইনস্টিটিউট। প্রতিষ্ঠানটির এ সংক্রান্তে পরিচালিত গ্লোভাল থিঙ্কট্যাঙ্কস জরিপে গত বছরও ব্রি একই ক্যাটাগরিতে শীর্ষস্থানে ছিল। বিশ্বের খাদ্যনিরাপত্তাবিষয়ক এসব গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও গবেষকদের অঞ্চল, গবেষণার বিষয়বস্তু এবং তাদের অর্জনের ওপর ভিত্তি করে রিপোর্টটি প্রস্তুত করা হয়। এ দিকে আন্তর্জাতিক এ স্বীকৃতির ফলে গাজীপুরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ‘ব্রি’ সদর দফতরে প্রাণ চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের থিঙ্কট্যাঙ্কস অ্যান্ড সিভিল সোসাইটি প্রোগ্রামের (টিটিসিএসপি) গবেষণার জরিপে ভারতের ইন্টারন্যাশনাল ক্রপ রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর সেমি এরিড ট্রপিক (আইসিআরআইএসএটি) ২৯তম, বাংলাদেশের সিপিডির অবস্থান একই বিভাগে ৩৫তম এবং ফিলিপিন্সে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) ২৯তম স্থানে রয়েছে।
এ সাফল্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাজাহান কবীর বলেন, আমাদের কার্যক্রম আন্তর্জাতিক গবেষণায় প্রবেশ করেছে। এটাকে আমরা একটা বিরাট অর্জন ও সম্মানের মনে করি। আমরা সত্যিকার অর্থেই খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যে কাজ করছি এ গবেষণায় তা প্রতিফলিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এবং কৃষি মন্ত্রীর নিবিড় তত্ত্বাবধানের কারণেই আজকে আমরা এ সাফল্য অর্জন করতে পেরেছি। এই স্বীকৃতির ফলে আমরা গৌরবান্বিত বোধ করছি। আমরা কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও চালের উৎপাদনে ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে তৃতীয় অবস্থানে এসেছি। সবার সহযোগিতায় সামনের দিনগুলোতেও সাফল্যের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চাই।
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লডার ইনস্টিটিউটের থিঙ্কট্যাঙ্কস এবং সিভিল সোসাইটি প্রোগ্রাম (টিটিসিএসপি) বিশ্বব্যাপী সরকার ও নাগরিক নীতিনির্ধারণী প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করে থাকে। ২০০৬ সালে সূচকটি চালু হওয়ার পরে গ্লোবাল থিঙ্কট্যাঙ্কস সূচক বা জিজিটিটিআইয়ের ১৫তম গবেষণা প্রতিবেদন এটি।
১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে উচ্চফলনশীল ধানের জাত এবং ধান উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে ব্রি। ব্রি উদ্ভাবিত ধানের জাত সংখ্যা প্রায় শতাধিক। প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীদের নিবিড় গবেষণার ফলে ধান উৎপাদন তিনগুণের বেশি বেড়েছে। ফলে ধান গবেষণায় ব্রি সারা বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছে।
ব্রির উচ্চ ফলনশীল আধুনিক ধানের জাত বর্তমানে দেশের বোরো ধানের (শীতকালীন ধান) ৮২%, আউশের (গ্রীষ্ম কালীন) ৩৬% এবং রোপা আমনের (বর্ষাকালীন ধান) ৪৭% এলাকায় চাষ হচ্ছে। বর্তমানে দেশের মোট ৭৫% জমিতে ব্রি ধানের চাষ হয় এবং এর থেকে দেশের মোট ধান উৎপাদনের শতকরা ৮৫ ভাগ আসে। ব্রির উচ্চফলনশীল আধুনিক জাত প্রতি বছর ধান উৎপাদন বৃদ্ধিতে মুখ্য ভূমিকা রেখে আসছে।