নিউজ ডেস্ক:
বিএনপির নেতৃত্ব থেকে খালেদা জিয়াকে সরাতে তারেক রহমানের হাত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় একাধিক নেতা। এ নিয়ে ১৩ জুন দলটির গুলশান কার্যালয়ে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। কার্যালয় সূত্র বলছে, মা-ছেলের নিয়ন্ত্রণে থাকা দলের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব এখন প্রায় প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে।
জানা গেছে, আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণের জন্য বিএনপির শীর্ষ নেতারা খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে ঈদের পর ১৩ জুন বুধবার রাতে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির ভূমিকা নিয়ে কথা হয় বৈঠকে। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠক চলাকালে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সদ্য বাতিল হওয়া ছাত্রদলের কমিটির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুমতি ছাড়া ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করলে হঠাৎ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলে উঠেন- ‘ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্তে আমরা কারাগারে ম্যাডাম জিয়ার অনুমতি নিয়েছি। এ সময় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বিএনপি নেতা ড. মঈন খানকে মিথ্যাবাদী বলে সম্বোধন করলে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখুন, ছাত্রদলকে নিয়ে এমনিতেই আমরা উভয় সংকটে আছি। আর ড. মঈন খানরা খালেদা জিয়ার কথা বলে মিথ্যাচার করছেন। বেগম জিয়ার নাম ভাঙিয়ে ছাত্রদল কমিটি বিলুপ্তির কথা বলে দলে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করছেন। ড. মঈন খান আর রিজভীর মতো নেতাদের- না আছে সাংগঠনিক শক্তি, না আছে দল চালানোর মতো বুদ্ধি। এরা বেগম জিয়ার নাম ভাঙিয়ে দলের ক্ষতি করছেন। আমি মনে করি, বেগম জিয়ার বয়স হয়েছে, এখন উনার অবসরের সময় এসেছে। তাই উনি নিজে থেকেই তারেক রহমানের হাতে দলের ভার দিয়ে বিশ্রামে যেতে চান। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে বেগম জিয়ার সাথে আমাদের দূরত্ব সৃষ্টি করে রাখা হচ্ছে। আমাদের স্পষ্ট কথা- আমাদের নেতা তারেক রহমান আগামী দিনে দলের কর্ণধার। ম্যাডাম কারাগার থেকে বের হলে আমরা তাকে অবসরে বিশ্রামে পাঠানোর চিন্তা করছি।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ছাত্রদলের কমিটি বেগম খালেদা জিয়ার স্পষ্ট নির্দেশনা নিয়ে আমরা বিলুপ্ত করেছি। কারাগারে বেগম জিয়ার সাথে দেখা করার সময় তিনি এই অকর্মণ্য ছাত্রদলের কমিটির নেতাদের দল থেকে বের করে দিতে বলেছেন। আমরা তার নির্দেশে সেটাই করেছি। গয়েশ্বরের মতো নেতাদের এই কমিটি বিলুপ্তির ঘটনায় ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে তাই তাদের অন্তর জ্বলছে। খালেদা জিয়া আমাদের দলের চূড়ান্ত নেতা। তার নির্দেশনাই বিএনপির জন্য শেষ কথা। তারেক রহমানের জন্য দল ধ্বংস হতে পারে না।
এদিকে বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, জাতীয়তাবাদী দলের মূল সমস্যা হলো মা-ছেলের মধ্যকার ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। দলের নেতৃত্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত। এক গ্রুপ খালেদা জিয়ার পক্ষে, আরেক গ্রুপ তারেক রহমানের নিয়ন্ত্রণে। মূলত খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্ব দখলের দ্বন্দ্বে একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে বিএনপি।