গাইবান্ধা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কোমরনই কেন্দ্রে ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহীনির ৩টি গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর করাসহ একটি লেগুনাতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী (রেল ইঞ্জিন) প্রতীকের আনোয়ারুল সরোয়ার শাহিবের কর্মী-সমর্থকসহ পক্ষের লোকজন এই হামলা চালায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। হামলার ঘটনায় পুলিশ, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির সদস্যদের সাথে হামলাকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে গাইবান্ধা পৌর এলাকার কোমরনই কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণার পরেই এই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী হামলা, ভাঙচুর ও ধাওয়ার ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়েই থমথমে ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলায় আহত পুলিশ ও র্যাব সদস্যকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কোমরনই কেন্দ্রে ভোট গণনা শেষে প্রিসাইডিং অফিসার ফলাফল ঘোষণা করেন। ফলাফল জেনেই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুল সরোয়ার শাহিবের পক্ষের কর্মী-সমর্থক ও তার পক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এসময় তারা পুলিশ ও র্যাবের ব্যবহৃত ৩টি মাইক্রোবাসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করাসহ পুলিশের একটি লেগুনা গাড়ি আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ ও র্যাবের সদস্যদের ওপরে হামলা চালায় তারা। একই সঙ্গে লেগুনার আগুন নেভাতে আসা ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীকেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আহত করা হয়।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে মুঠোফোনে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম হামলা ও ভাঙচুর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ওই ভোট কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফলে কম ভোট পাওয়ায় রেল ইঞ্জিন প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর লোকজন পরিকল্পিতভাবে এই হামলা, ভাঙচুর ও আগুনের ঘটনা ঘটায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তারপরেও তারা আইনশৃঙ্খলা বাহীনির সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ও পাথর ছুড়তে থাকে। হামলাকারীরা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও র্যাবের ৩টি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে। এছাড়া পুলিশের রিকুইজিশনের একটি লেগুনা গাড়িতে আগুন দেয় হামলাকারীরা।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কোমরনই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছাড়াও পুরো শহরজুড়েই আইনশৃঙ্খলা বাহীনির সদস্যদের টহল জোরদার করা হয়েছে। হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে, হামলা ও ভাঙচুর ঘটনার বিষয়ে জানতে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুল সারোয়ার শাহিবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। হামলার ঘটনায় মুখ খুলতে চায়নি তার কর্মী-সমর্থকরাও।