ডেস্ক নিউজ
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তরার ঘটনায় মর্মাহত ও কষ্ট পেয়েছেন। একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। প্রকল্প পরিচালক, ঠিকাদারের দায়িত্ব হলো এ ধরনের কাজ যথাযথভাবে করা। তারা নিরাপত্তা না নিয়ে কিভাবে এ ধরনের কাজ করতে পারে? সড়কপথ বন্ধ না করে তারা কিভাবে এ কাজ করল। কেন এটা হলো, এটা খতিয়ে দেখতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সুষ্ঠু তদন্ত করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। সে যেই হোক, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। জীবনের অনেক মূল্য। তদন্তে যাদের গাফিলতি পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা মারা গেছেন সবার জীবন মূল্যবান।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তিনি। সভা শেষে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো: মামুন-আল-রশীদ, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সত্যজিৎ কর্মকার, তথ্য ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন এবং পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম প্রমুখ।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বরেন্দ্র এলাকায় পানি সংরক্ষণসহ ছয় প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৪৭১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে এক হাজার ৫৯৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণসহায়তা থেকে ৮৭৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা জোগান দেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য বলেছেন। খাদ্য খাতে স্বাবলম্বী হওয়ার কথা বলেছেন। তিনি সেচের কাজ সোলারে করতে বলেছেন। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির জন্য জ্বালানি তেল দায়ী। রাশিয়া থেকে ভারত তেল কিনতে পারলে আমরা কেন পারব না। আমরা রাশিয়া থেকেও তেল আনতে পারব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জ্বালানি তেল কেনার বিষয়ে নানা ধরনের পথ বের করতে বলেছেন। দরকার হয় রাশিয়ান মুদ্রা রুবলে জ্বালানি তেল কেনার বিষয়টি দেখতে বলেছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, একনেক বৈঠকে উত্তরার দুর্ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী। প্রাথমিক প্রতিবেদনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফলতির তথ্য জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনা খুব মন দিয়ে শুনেছেন এবং আবেগতাড়িত হয়ে যান। এরপর তিনি নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত এবং যেই কোম্পানি জড়িত সবার বিরুদ্ধে তদন্ত-সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে হবে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো : ৪৫৭ কোটি টাকায় সোনাপুর-কবিরহাট-কোম্পানীগঞ্জ (বসুরহাট-দাগনভূইয়া) আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ, ৭৪৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে গল্পামারী-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়কের ২৮তম কিলোমিটারে চুনকুড়ি নদীর উপর চুনকুড়ি সেতু নির্মাণ, ৪৫৮ কোটি টাকা বর্ধিত ব্যয়ে আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার নদীবন্দর স্থাপন, ৪৩৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা বর্ধিত ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ, ১২৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বর্ধিত খরচে বিসিক মুদ্রণ শিল্প নগরী এবং ২৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকায় বরেন্দ্র এলাকায় খালে পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্প।