ডেস্ক নিউজ
প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের কাঁকড়ার খামার ও চিংড়ির ঘের। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।
রোববার ভোর রাতে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলা। বিধ্বস্ত হয় সহস্রাধিক ঘরবাড়ি। ঝড়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাকিবের খামারও।
সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরে সাকিব আল হাসান বিপুল টাকা বিনিয়োগ করে গড়ে তুলেন কাঁকড়ার খামার আর চিংড়ির ঘের।
আমাদের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বুলবুলের কারণে সাকিবের খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।
জানা গেছে, রোববার ভোররাতে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল তছনছ করে দেয় সাকিবের কাঁকড়ার খামারের বেড়া। খামারের বেড়িবাঁধ ঠিক থাকলেও উল্টে গেছে টিন ও বাঁশের বেড়া। তাছাড়া বর্তমানে কাঁকড়ার প্রজেক্টের বন্ধ মৌসুম থাকায় খুববেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ঘেরের বাঁধ মজবুত হওয়ায় তা ভাঙেনি। তবে পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ঘেরের বেড়া নষ্ট হয়েছে।
সাকিব অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের সুপারভাইজার তৌফিক রহমান জানান, খামারটি এখন বন্ধ রয়েছে। শীতের মৌসুমে তিন মাস কাঁকড়া পাওয়া যায় না। যে কারণে বর্তমানে প্রজেক্ট বন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে পুকুরগুলো পানিতে ভেসে গেছে। খামারের টিনের বেড়াগুলো উল্টে পড়েছে। এছাড়া খুব বেশি ক্ষতি হয়নি।
সাকিব যে চিংড়ি আর কাঁকড়ার ব্যবসায় নাম লিখিয়েছেন সেটা অনেকেরই অজানা ছিল। তিনি আইসিসির নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর বিষয়টি গণমাধ্যমে আসতে শুরু করে।
জানা গেছে, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনীর পোড়াকটলা দাতনেখালী এলাকায় ৫০ বিঘা জমির ওপর সাকিবের খামারটি অবস্থিত। নাম ‘সাকিব অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড’। চার বছর আগে শুরু হওয়া খামারটির কাজ ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
আগামী বছরের যেকোনো সময় এটা উদ্বোধন করার কথা। সাতক্ষীরার ক্রিকেটার সগীর হোসেন পাভেল এই খামারের দেখাশোনা করেন। খামারে শ্রমিকদের থাকার জন্য ও চিংড়ি-কাঁকড়া প্রসেসিং করার জন্য ফ্রিজিং রুমও তৈরি করা হয়েছে।
কাঁকড়ার জন্য বসানো হচ্ছিল প্রায় ৩০ হাজার বক্স। ৩০ বিঘা জমিতে ছিল চিংড়ির ঘের। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এসে এসব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জানা যায়, আইলা দুর্গত মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য গড়ে তোলা হয় এই কাঁকড়া উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ খামার।
খামারটিতে ৩০ হাজার বাক্সে কাঁকড়া মোটাতাজা শুরু করলেও এখন তা চার লাখে উন্নীত হয়েছে। কাজ করছে দুইশ শ্রমিক। গত দুই বছরে এ খামার থেকে অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, জার্মানি, ব্রিটেন ও সিঙ্গাপুরে রফতানি হয়েছে প্রায় ৪শ মেট্রিক টন কাঁকড়া।