ডেস্ক নিউজ
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব কিংবা তার পরবর্তি সময়ের জন্য ডিজিটাল সংযুক্তির জন্য যতটুকু প্রস্তুতির দরকার আমরা তা সম্পন্ন করেছি। এক্ষেত্রে যেসকল ক্রুটি বিদ্যমান আছে তা চলতি বছরের মধ্যে দূর হয়ে যাবে। তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশ ৫জি চালুর বিষয়টি চিন্তাও করেনি কিন্তু বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে ৫জি চালু করতে যাচ্ছে। এই বছরেই সারা দেশে ৪জি যাচ্ছে। ২৩ সালে আসছে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল। ২১ সালেই হাওর-বিল-চর পার্বত্য অঞ্চল ক্যাবল/স্যাটেলাইট সংযোগের আওতায় আসছে।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) আইইবি’র শহীদ প্রকৌশলী ভবনের কাউন্সিল হলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)’র উদ্যোগে আয়োজিত চতুর্থ শিল্প বিপ্লব: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট শীর্ষক সেমিনারে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আইইবি’র প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও আইইবি’র প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, আইইবি’র সম্মানী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু), পিইঞ্জ.। সেমিনার আহবায়ক ও আইইবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এইচআরডি) প্রকৌশলী মো. নূরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, পিইঞ্জ.। সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী এ. এফ এম সাইফুল আমিন এবং বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইইবি’র ভাইস-প্রেসিডেন্ট (একা. এন্ড আন্ত.) প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি কেবল চতুর্থ শিল্প বিপ্লবেই সীমিত নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির মাঝে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে যে রূপান্তর ঘটানো দরকার তা নিহিত রয়েছে।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ৭৩ সালে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়ন ও ইউপিই্উ এর সদস্য পদ অর্জন এবং ৭৫ এর ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জাতির পিতা ডিজিটালাইজেশনের বীজ বপণ করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে কম্পিউটারের ওপর থেকে শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার, অনলাইন ইন্টারনেট চালু করে সাধারণের নাগালে মোবাইল পৌঁছে দিতে মোবাইল ফোনের মনোপলি ব্যবসা বন্ধ করে চারটি মোবাইল কোম্পানিকে লাইসেন্স প্রদান এবং ভিস্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেট চালুসহ যুগান্তকারী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে ডিজিটাইজেশনের রোপিত বীজটিকে চারা গাছে রূপান্তর করেন। ২০০৯ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত তারই ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় তা আজ বিরাট মহিরূহে রূপান্তর লাভ করেছে। তিনি বলেন, শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রযুক্তি শিক্ষা বাধ্যতা মূলক করতে হবে। আমাদের তরুণ প্রজন্ম অত্যন্ত মেধাবি তাদেরকে আগামী দিনের সম্পদে
পরিণত করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, জনসংখ্যাই আমাদের বড় সম্পদ। তিনি বলেন কোভিডকালে ডিজিটাল বাংলাদেশের সফলতার ফলে দেশে শতকরা ৭০ভাগ মানুষ ঘরে বসে টেলিমেডিসিন চিকিৎসা নিয়েছে। গ্রামের প্রথম শ্রেণির শিশুটিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে তার শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ২০২২ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ডাকঘরকে ডিডিটাল ডাকঘরে রূপান্তর করার কাজ চলছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। আমরা ইতোমধ্যে সেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি। আগামী ২৬ মার্চ চব্বিশ হাজার ম্যাগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনে আমরা সক্ষম হবো। তিনি বিদ্যুতের সাবমেরিন ক্যাবলেল সাথে ডিজিটাল সংযোগের তার নেবার ব্যবস্থার কথাও জানান।
তথ্য ও যোগোযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য অপরিহার্য উল্লেখ করে বলেন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ জনসম্পদ জরুরী। এই লক্ষ্যে ৩৯টি হাইটেক পার্ক নির্মাণসহ যুগান্তকারী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।