ডেস্ক নিউজ
অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণে জাপানের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইয়োশিমাসা বলেছেন, বাংলাদেশের সাথে দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে জাপান সমুদ্র অর্থনীতি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ও ওষুধ শিল্পে আরো সহযোগিতায় আগ্রহী। মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশকে বৃত্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেয়া অব্যাহত রাখবে জাপান।
গতকাল সোমবার টোকিওতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে হায়াশি ইয়োশিমাসা এ সব কথা বলেন। গত নভেম্বরে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর হায়াশির সাথে ড. মোমেনের এটি প্রথম বৈঠক। আজ থেকে অনুষ্ঠেয় মহাসাগর বিষয়ক সম্মেলনে অংশ নিতে পালাও যাওয়ার পথে টোকিওতে যাত্রাবিরতি করেন ড. মোমেন। পালাও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপপুঞ্জ।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। ড. মোমেন ভাষানচরে ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরসহ সঙ্কট নিরসনে এ পর্যন্ত নেয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন। তিনি রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে জাপানের অবিচল প্রতিশ্রুতির জন্য ধন্যবাদ জানান এবং সমস্যার দ্রুত সমাধানে জাপানের আরো বেশি সম্পৃক্ততার অনুরোধ জানান।
পররষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য প্রত্যাবাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ইস্যুতে বাংলাদেশকে দেয়া সহায়তা অব্যাহত রাখবে জাপান। তিনি ইউক্রেন, উত্তর কোরিয়া এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের পরিস্থিতি তুলে ধরে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় দেশ। যুদ্ধের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া বা লিবিয়ার যুদ্ধে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা আমরা ইউক্রেনেও প্রত্যক্ষ করছি। বাংলাদেশ মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং ইউক্রেনে মানবিক সহায়তা দেয়ার জন্য জাতিসঙ্ঘে উত্থাপিত প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে।
দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশের ওপর এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বৈশ্বিক ইস্যুতে এক সাথে কাজ করতে সম্মত হন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বাংলাদেশে আঞ্চলিক অভিযোজন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য জাপানের সহায়তা কামনা করেন। দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বহুপক্ষীয় ফোরামগুলোতে নিজ নিজ দেশের ভবিষ্যৎ প্রার্থিতা নিয়ে আলোচনা করেন। এসব ক্ষেত্রে তারা একে অপরের প্রার্থীকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন।
ড. মোমেন সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান।