ডেস্ক নিউজ
যুদ্ধাপরাধীদের দল খ্যাত জামায়াতের নানাবিধ অপকর্ম ও অপরাধের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন একজন ব্রিটিশ আইনজীবী। যেটি প্রকাশ পাওয়ার পর জামায়াতের সেক্রেটারি ডা. শফিকুর রহমান নিজ থেকে তা গ্রন্থ আকারে প্রকাশ করার জন্য ফান্ড সংগ্রহের চেষ্টা করেছিলেন। হঠাৎ এমন তথ্য প্রকাশে প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন তিনি। প্রশ্ন উঠেছে- তিনি কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে হয়তো এমন চেষ্টায় ব্রত হয়েছিলেন।
তথ্যসূত্র বলছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রশ্ন তুলেছিলেন ব্রিটিশ আইনজীবী জিওফ্রে রবার্টসন। ওইদিন লন্ডনের ডায়েটি স্ট্রিটে এই আইনজীবীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘রিপোর্ট অন দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তিনি। ওই প্রতিবেদনে ‘জামায়াত নেতারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছেন’- এমন মন্তব্য করেন তিনি। চার বছর পর তার এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা শুরু হয়েছে জামায়াতে। ইতোমধ্যে গঠিত হয়েছে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটিও।
জামায়াতের একাধিক দায়িত্বশীল নেতারা জানান, ২০১৫ সালে ব্রিটিশ আইনজীবী বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং এর বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। তার ওই প্রতিবেদনের প্রকাশের পর তা গ্রন্থ আকারে প্রকাশে সহায়তা করতে ফান্ড গঠনের আশ্বাস দেন ডা. শফিকুর রহমান।
দায়িত্বশীল একটি সূত্রের দাবি, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান গ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগে সমর্থন দেন এবং ফান্ড সংগ্রহের চেষ্টা করেন। ডা. শফিকুর রহমান গ্রন্থটি প্রকাশের অনুমতি দেন। পরে এ বছরের শুরুর দিকে নেতাদের কেউ-কেউ প্রশ্ন তোলেন, খোদ জামায়াতের বিরুদ্ধেই লিখেছেন ব্রিটিশ আইনজীবী। বিষয়টি সামনে আসার পরই দলের ভেতরে সমালোচনা শুরু হয়। দলের নির্বাহী পরিষদের একাধিক সদস্যও প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের একাধিক সদস্য জানান, প্রথম থেকে এই প্রতিবেদনটি বই আকারে প্রকাশের পেছনে সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমানের ভূমিকার কথাই জানতেন তাদের অনেকে। এই বছর বিষয়টি নিয়ে দলের ভেতরে সমালোচনা শুরু হওয়ার একপর্যায়ে তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ। দুই সদস্যের এই তদন্ত কমিটিতে আছেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ ও মোবারক হোসেন।
দলের উচ্চ পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, গ্রন্থটি কীভাবে প্রকাশিত হলো, কোন পন্থায় কীভাবে অর্থ সংগ্রহ হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরার জন্যই তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ডা. শফিকুর রহমানের উদ্দেশ্য বিষয়ক সমস্ত বিষয় ওই তদন্তে তুলে আনা হবে।
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির সদস্য ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, আমি এই বিষয়ে কথা বলতে বিব্রতবোধ করছি। এ নিয়ে কোনও কথা বলতে পারবো না।