ডেস্ক নিউজ
১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর জিয়াউর রহমান কর্তৃক ‘সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিচারের নামে ফাঁসি দিয়ে হত্যা, লাশ গুম, কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুতির ঘটনার বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশনের দাবি তুলে ধরা হয়েছে। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এসময় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবিতে আয়োজিত আলোচনাসভায় বক্তারা এ দাবিটি তুলে ধরেন। সভার আয়োজন করে ‘শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কেন্দ্রীয় কমান্ড।
সভায় সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, আমাদের দেশে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর থেকে বেশ কয়েকটি কলঙ্কময় হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তার মধ্যে ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবরের ঘটনা অন্যতম। এসব কলঙ্কময় দিনের মূল কুশীলব ছিল খুনি জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করে সে ক্ষান্ত হয়নি, এর পরও অসংখ্য দেশপ্রেমিককে হত্যা করা হয়েছে। গত চার শ বছরের ইতিহাস যদি ঘাঁটি, তাহলে যে মানুষটিকে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম খুনি বলে আমরা বিচার করব- সে খুনি জিয়াউর রহমান। তার হাতে রক্তের দাগ ছিল। এ কারণে সে ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবরের ঘটনাকে খুনের একটি উসিলা হিসেবে নিয়েছিল।
‘সে সময়ে ফাঁসি দেওয়ার পরে রায় দেওয়া হয়েছে’ দাবি করে এই বিচারপতি বলেন, এমন নজির সারা বিশ্বে কোথাও খুঁজে পাবেন না। ফাঁসি দেওয়া হলে তার লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু জিয়া সেটিও হতে দেয়নি। এতেই বোঝা যায় সে কতটা নিষ্ঠুর ও নির্মম ছিল। বিচারের নামে জিয়া সেদিন ২ হাজার ২০০ মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছিল। শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কেন্দ্রীয় কমান্ডের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিচারপতি মানিক বলেন, আপনাদের সাত দফা দাবির সঙ্গে আমিও একটি দাবি রাখতে চাই। ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবরের ঘটনা জাতি জানতে চায়।
সভায় সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, জিয়াউর রহমান এক আদর্শহীন নায়ক। তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমান বা যারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে, তাদের প্রত্যেকের মরণোত্তর বিচার হওয়া উচিত।
শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কেন্দ্রীয় কমান্ডের দাবির মধ্যে রয়েছে ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্য যারা খুনি জিয়ার সামরিক ষড়যন্ত্রের শিকার মারা গেছেন ও যারা চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তাদের প্রত্যেককে স্ব-স্ব পদে সর্বোচ্চ র্যাংকে পদোন্নতি দেখিয়ে বর্তমান স্কেলে বেতন-ভাতা ও পেনশনসহ সরকারি সব রকম সুযোগ-সুবিধা প্রদান, সেসব সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যকে পুনর্বাসিত করার লক্ষ্যে তাদের পোষ্যদের যোগ্যতা অনুসারে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রদান করা, সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্য যাদের অন্যায়ভাবে ফাঁসি কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের তালিকা প্রকাশ করা, খুনি জিয়ার মরণোত্তর বিচার করা ইত্যাদি।
এ সময় বক্তব্য রাখেন বীর বিক্রম মাহবুব উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক বজলুল হক, ফায়ারিং স্কোয়ার্ডে নিহত সার্জেন্ট দেলোয়ার হোসেনের ছেলে নুরে আলম, মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী লায়লা আরজুমান মানু, সৈয়দ কামরুজ্জামান, গাজী গোলাম মাওলা, হাফিজুর রহমান প্রমুখ।