ডেস্ক নিউজ
আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মেজর ইকোনমিজ ফোরাম অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লাইমেট শীর্ষ সম্মেলনে ধারণকৃত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আহ্বানে শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মেজর ইকোনমিস ফোরাম অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লাইমেট শীর্ষ সম্মেলনের উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ধারণ করা এ ভাষণে জ্বালানি ও জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে ৫ টি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী তার প্রথম প্রস্তাবে প্রধান কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলোকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার লক্ষ্যে তাদের কার্বন নির্গমন হ্রাস করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা তার দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলেন, জলবায়ু তহবিলের জন্য উন্নত দেশগুলোর বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে এবং অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ৫০:৫০ বিতরণ করতে হবে।
তৃতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রযুক্তি হস্তান্তরের পাশাপাশি সবচেয়ে কার্যকর জ্বালানি সমাধান নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তার চতুর্থ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে উত্তরণের ক্ষেত্রে, জাতি-রাষ্ট্রগুলোর সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন অগ্রাধিকারগুলোর হিসাব নেয়া এবং তাদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লোকসান ও ক্ষতির বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী তার পঞ্চম প্রস্তাবে বলেছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবনাক্ততা বৃদ্ধি, নদীর ভাঙন, বন্যা ও খরার কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব সকল দেশের ভাগ করে নেওয়া দরকার।
পরে প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে জলবায়ু তহবিল, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রযুক্তি হস্তান্তর, কার্যকর জ্বালানি সমাধান, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারসহ বাস্তুচ্যুত মানুষদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব সব দেশকে ভাগ করে নেয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও প্রশমন প্রচেষ্টায় সরকার অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে বলে উল্লেখ করেন বলেন তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সর্বাধিক বিস্তৃত অভ্যন্তরীণ সৌরশক্তি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গার কারণে বাংলাদেশ গুরুতর ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবনাক্ততা বৃদ্ধি, নদী ভাঙন, বন্যা ও খরার প্রভাব ছাড়াও ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা জোরপূর্বক মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়ার কারণে বাংলাদেশ গুরুতর জলবায়ু প্রভাবের সম্মুখীন হচ্ছে”।
জলবায়ু ঝুঁকি ফোরাম–সিভিএফ এবং ভি-২০’র সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর স্বার্থ তুলে ধরা।