সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে কথিত মডেল দেওয়ান রসুল হৃদয়। টিকটকে মডেল বানানোর ফাঁদে ফেলে একে একে চার ছাত্রীকে নিজের বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার রাতে এ ঘটনায় রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে গত ১৬ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কুড়িলে হৃদয়ের বাসায় তাদেরকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার শিকার ছাত্রীরা ভাটারা থানায় অভিযোগ দিলে গতকাল পুলিশ হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ বলছে, পাশবিকতার শিকার ছাত্রীদের তিনজন কলেজ এবং একজন স্কুলের ছাত্রী। তাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে। তারা ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় থাকে। গ্রেপ্তার হৃদয় একজন ক্রমিক ধর্ষক (সিরিয়াল রেপিস্ট)।
পুলিশ জানায়, হৃদয় গত ১২ সেপ্টেম্বর নিজের বন্ধুদের নিয়ে গাজীপুরের একটি রিসোর্টে পার্টির আয়োজন করে। সেখানে পরিচয়ের সূত্রে দুই কলেজ শিক্ষার্থী মডেল হওয়ার আগ্রহ দেখায়। এর দু’দিন পর হৃদয়ের এক বান্ধবীর মাধ্যমে তারা কুড়িলে হৃদয়ের বাসায় আসে। টিকটকের শুটিং শুরু হওয়ার কথা বলে তাদের ওই বাসার নিচতলার একটি কক্ষে থাকতে দেওয়া হয়। এরপর ওই ছাত্রীদের ওপর পাশবিকতা চালায় সে।
হৃদয়ের ফেসবুকে ‘টিকটক ও লাইকিতে অভিনয়ের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে’- এমন বিজ্ঞাপন দেখে গত ২০ সেপ্টেম্বর আরো দুই শিক্ষার্থী হৃদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদেরও হৃদয় শুটিংয়ের কথা বলে নিজের বাসায় থাকতে দেয়। পর দিন সকালে তাদের মধ্যে একজনকে বাসার তৃতীয় তলায় নিয়ে পাশবিকতা চালানো হয়। ওই রাতেই আরেক শিক্ষার্থীর ওপর চলে পাশবিকতা। এভাবে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার শিক্ষার্থীকে নিজের বাসায় আটকে রেখে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে হৃদয়।
ভাটারা থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান বলেন, ঘটনার শিকার চার ছাত্রীর একজন থানায় অভিযোগ দিয়েছিল। এরপর পুলিশ ঘটনা তদন্ত করতে গেলে কথিত মডেল হৃদয়ের হিংস্র রূপ বেরিয়ে আসে। পুলিশ জানতে পারে একজন নয়, একে একে চারজনকে ধর্ষণ করেছে ওই নরপশু।
তিনি আরো বলেন, কুড়িলের বাড়িটি হৃদয়ের নিজস্ব। পরিচয় গোপন করে মেয়েদের বাড়ির নিচতলায় ভাড়াটে হিসেবে রাখত। সেখানে ঘটনার শিকার চারজনসহ আরও এক তরুণীকে পাওয়া গেছে। তবে ওই তরুণী তার প্রতি কোনো পাশবিকতা হয়নি বলে দাবি করেছেন। অবশ্য একজনের অভিযোগ তদন্তে গিয়ে আরও তিনজন হৃদয়ের পাশবিকতার বিবরণ দিয়েছে। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয়ও তার অপকর্মের কথা স্বীকার করেছে।
পুলিশের তদন্ত সংশ্নিষ্ট অন্য এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হৃদয় নিজেকে মডেল ও নৃত্যশিল্পী পরিচয় দেয়। দীর্ঘদিন ধরেই সে এমন পরিচয়ে অপকর্ম করে আসছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে। তার আর কোনো সহযোগী রয়েছে কিনা, তা জানার চেষ্টা চলছে।