ডেস্ক নিউজ
করোনার চলমান টিকাদান কর্মসূচিতে বড় পরিবর্তন এনেছে সরকার। ৩৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কর্মসূচি শুরু হলেও এখন সরকারের হাতে থাকা ৭০ লাখ টিকার পুরোটায় দিয়ে দেওয়া হবে। অর্থাৎ এখন একনাগাড়ে ৭০ লাখ মানুষ টিকার প্রথম ডোজ পাবে। পরে এই ৭০ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজ শুরু হবে প্রথম ডোজের আট সপ্তাহ পর অর্থাৎ ৭ এপ্রিল থেকে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দেশ রূপান্তরকে জানান, টিকার মেয়াদের দিক লক্ষ রেখে এবং সরকারের কেনা টিকার দ্বিতীয় চালান প্রাপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার টিকার জাতীয় পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছে। দ্বিতীয় ডোজের টিকা আসা নিশ্চিত হয়েছে। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০ লাখ আসবে। পরের মাসে মার্চের প্রথম সপ্তাহে আরও ৩০ লাখ বা ৫০ লাখ আসবে। দ্বিতীয় ডোজের আট সপ্তাহ সময় আছে। সুতরাং এখন একনাগাড়ে ৭০ লাখ টিকা দিয়ে দেওয়া হবে।
পাশাপাশি যেসব এলাকায় টিকা কম নেওয়া হচ্ছে, সেসব এলাকায় টিকা বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তর থেকে এ জন্য টিম করা হয়েছে। এসব টিম বিভাগ অনুযায়ী সরজমিনে ঘুরে এলাকাগুলোর জন্য নতুন পরিকল্পনা নেবে।
তবে প্রথম দফায় অর্থাৎ ৭০ লাখ টিকা শেষ হওয়ার আগে সরকার টিকাগ্রহীতাদের বয়সসীমা আর কমাবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তাদের মতে, এখন যে ১৯ শ্রেণির মানুষকে টিকা দেওয়া হচ্ছে, তাদের মাধ্যমেই প্রথম দফার লক্ষ্য পূরণ হয়ে যাবে। এ ছাড়া গ্রামাঞ্চলে বাদ পড়া ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষকে টিকার আওতায় আনতে আপাতত সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও জানান এসব কর্মকর্তা।
দেশের বিশেষজ্ঞরা অবশ্য নারী, নিম্নবিত্ত গরিব, দিনমজুর ও গ্রামের বয়স্ক মানুষকে করোনার টিকার আওতায় আনার ওপর জোর দিয়েছেন। তাদের মতে, এই শ্রেণির মানুষ কিছুতেই টিকা নিচ্ছে না। তাদের কাছে টিকা নিয়ে যেতে হবে।
করোনা টিকাদানের জাতীয় পরিকল্পনায় পরিবর্তনের ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গতকাল শুক্রবার রাতে দেশ রূপান্তরকে বলেন, এখন পরিকল্পনা নিশ্চয় পরিবর্তন হবে। কারণ টিকা পাওয়ার ওপর নির্ভর করবে পরবর্তীতে আমরা কীভাবে টিকা দেব। আপাতত যে ৭০ লাখ টিকা আছে, তার মধ্যে থেকে প্রথম ডোজ হিসেবে দিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ শুরু হবে প্রথম ডোজের আট সপ্তাহ পর অর্থাৎ ৭ এপ্রিল থেকে।
এ ছাড়া টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বর্তমানে ৪০ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সসীমা আর কমাবে না সরকার জানান এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এখন যেহেতু মানুষের টিকার প্রতি আগ্রহ অনেক বেশি, তাই বয়সসীমা আর কমানো হবে না। যদি টিকা থাকত, তাহলে বয়স কমিয়ে দেওয়া যেত। সারা দুনিয়ায় এখন টিকার সংকট। টিকা পাওয়া খুব কঠিন হয়ে গেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভাগ্যিস টিকার জন্য টাকা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন। তা না হলে এখন টিকা পাওয়া অসম্ভব ছিল। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ এখনো টিকা পায়নি। উনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) রিস্ক নিয়ে টাকাটা দিয়েছিলেন বলেই এখন টিকা দিতে পারছি। তা না হলে সম্ভব ছিল না।
টিকাদান কর্মসূচির দুই সপ্তাহের পর্যালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার টিকাদান পরিকল্পনায় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। এর আগে ২৭ জানুয়ারি টিকা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন ও পরের দিন পাঁচ শতাধিক মানুষকে পরীক্ষামূলকভাবে টিকা দেওয়া হয়। সে হিসাবে গণটিকাদানের দুই সপ্তাহ পূর্ণ হলো আজ। এ সময় মোট টিকা নিয়েছেন ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৩ জন মানুষ। তাদের মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫৫ ও নারী ৬ লাখ ১৪ হাজার ৬৫৮ জন। এর মধ্যে ৫৩৭ জনের সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে।
টিকাদান কর্মসূচির দুই সপ্তাহের পর্যালোচনায় আপাতত টিকাদান কেন্দ্র বাড়ানোর কোনো দরকার দেখছে না স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ ব্যাপারে মহাপরিচালক বলেন, এখন যতগুলো কেন্দ্র আছে, নিবন্ধন ও কেন্দ্রের সক্ষমতা অনুযায়ী ঠিকই চলছে। লাগলে কেন্দ্র বাড়ানো হবে। কারণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাড়ে চার হাজার কেন্দ্র করার ক্ষমতা আছে। এখন তো কেন্দ্র করা হয়েছে ১ হাজার ১০টি। ইউনিয়ন পর্যন্ত কেন্দ্র করলে কেন্দ্র আরও বাড়বে।
এমনকি কোন শ্রেণির মানুষ টিকার বাইরে থেকে যাচ্ছে এ ব্যাপারে এখনো কোনো সার্ভিলেন্স বা হিসাব-নিকাশ করেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মহাপরিচালক বলেন, টিকার জন্য অগ্রাধিকারভিত্তিক ১৯ শ্রেণির ক্যাটাগরি করা আছে। এই ক্যাটাগরির যারা নিবন্ধন করবেন, তারা টিকা পাবেন। প্রথম দিকে লোকজন কম হচ্ছিল। আমরা স্পটে নিবন্ধন বাড়িয়ে দিলাম। তাতে কিছু লোকজন বেড়েছে। কিন্তু একধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। যারা নিবন্ধন করে গেছেন, তারা স্পটে নিবন্ধিতদের জন্য টিকা নিতে পারেননি। স্পটের নিবন্ধিতরা জোর করে টিকা নিয়েছেন। পরে আমরা স্পট নিবন্ধন বন্ধ করে দিয়েছি। এখন বয়স্কদের জন্য স্পটে নিবন্ধনব্যবস্থা রেখেছি, কিন্তু তারা ওই দিন টিকা নিতে পারছেন না। তাদের ডেট দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
নিম্নবিত্ত শ্রেণি ও নারীদের টিকা নেওয়ার হার খুবই কম। তাদের ব্যাপারে কোনো আলাদা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, কিছু মানুষকে টিকা দেওয়া খুব বিপদ। তারা কিছুই মানতে চায় না। করোনায় তাদের কিছু হবে না, এমন মনোভাব থেকে টিকা নিতে আসছে না; বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষ টিকার প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে না। শহরে করোনার প্রাদুর্ভাব বেশি। এখানকার মানুষ বেশি টিকা নেবে, এটাই স্বাভাবিক। পুরুষরা কাজ করে। তারা বেশি বের হয়। তাদের সুরক্ষা দরকার। তারা বেশি নেবে। সেটাই হচ্ছে।
মেয়াদের মধ্যেই সব টিকা : টিকা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর ডা. শামসুল ইসলাম বলেন, টিকা প্রথম দিকে একটু কম হয়েছে। এখন সেটা পূরণ করা হবে। আমাদের টার্গেট ৬০ লাখ টিকা। সেটা প্রথম দফায় শেষ করতে হবে। এটা শেষ করতে যে কয়েক দিন লাগবে, করব। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে পরবর্তীতে যে টিকা আসবে, সেটা দিয়ে দেব।
টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিক কোটায় বয়স আরও কমানো হবে কি না, জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ৪০ বছর থেকে তদূর্ধ্ব বয়সী মানুষের সংখ্যা প্রায় চার কোটি। এখন তো টিকা নিয়েছে ২০ লাখ। কিছু মানুষ তো বয়স ছাড়ায় নিচ্ছে। যেমন স্বাস্থ্যকর্মী, জনপ্রতিনিধি। সুতরাং বয়স কমানোর কোনো দরকার নেই। এখন যে কেন্দ্র আছে, সেখানে প্রতিদিন আড়াই লাখ মানুষ টিকা নিচ্ছে। এভাবে নিলেই তো আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রথম দফার টিকা শেষ হয়ে যাবে।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, টিকার মেয়াদ ঠিক রাখতেই সব টিকা দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথম চালানে আসা ৫০ লাখ টিকার মেয়াদ আছে এপ্রিল পর্যন্ত। সেটা মার্চের মধ্যে শেষ করা হবে। ভারত সরকারের উপহার হিসেবে দেওয়া ২০ লাখ টিকার মধ্যে ১০ লাখের মেয়াদ কম ছিল। সেটা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ১০ লাখের মেয়াদ আছে জুন পর্যন্ত। এর মধ্যে দিয়ে দেওয়া হবে।
আজ টিকাদানের দুই সপ্তাহ : আজ টিকাদান কর্মসূচির দুই সপ্তাহ হলো। ইতিমধ্যেই এ সময়ের টিকাদান কর্মসূচি পর্যালোচনা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইইডিসিআর। তাতে দেখা গেছে বরিশাল, খুলনাসহ কোনো কোনো জায়গায় টিকা কম নিচ্ছে মানুষ। সেসব জায়গায় মনিটরিং করা হচ্ছে। কেন কম হচ্ছে ও কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে কী ধরনের উদ্যোগ দরকার, সেটা বের করার চেষ্টা চলছে। এ জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে টিম করা হয়েছে। তাদের অঞ্চল ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। বিভাগ অনুযায়ী তারা ফলোআপ করছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার ২ লাখ ৬১ হাজার জনকে টিকা দিয়েছি। এখন যে টিম (টিকা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত) কাজ করছে, যদি টিকাগ্রহীতা পাওয়া যায় তা হলে এই টিমই দৈনিক সাড়ে তিন লাখ মানুষকে টিকা দিতে পারবে। এই দুই সপ্তাহে দেখা গেছে, বড় সেন্টারগুলোয় অনেক মানুষ যাচ্ছে। যেমন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মানুষ বেশি যাচ্ছে। অথচ ঢাকা শহরের ছোট ছোট আরও ৫০টির মতো কেন্দ্র আছে, সেখানে গড়ে মাত্র ১০০ থেকে ৩০০ মানুষ যাচ্ছে। অথচ এসব কেন্দ্রের প্রতিদিন ৮০০ থেকে ৯০০ মানুষকে টিকা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু সেখানে তুলনামূলকভাবে কম মানুষ নিবন্ধন করছে। নিবন্ধনের ক্ষেত্রে মানুষের উচিত ছোট ছোট কেন্দ্রে নিবন্ধন করা। সবারই বাসার আশপাশে দুই-তিনটা করে কেন্দ্র আছে। সেই সব জায়গায় যাওয়া উচিত। তা হলে আর বড় সেন্টারগুলোয় ভিড় হয় না। মানুষও সময়মতো টিকা পায়।
দুই সপ্তাহ শেষে টিকার খুতে বার্তা পেতে দেরি হওয়ায় মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। দেরির জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কোনো কোনো কেন্দ্রে চাপ বেশি এবং সরকারের আইটি বিভাগের সার্ভারসংক্রান্ত সমস্যাকে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। কর্মকর্তারা বলেন, মানুষের কাছে টিকার খুদে বার্তা যেতে দেরি হওয়ার মূল কারণ তথ্য ও প্রযুক্তি যোগাযোগ অধিদপ্তর। একসঙ্গে লোড বেশি হচ্ছে। সার্ভারে লোড বেশি হচ্ছে। তা ছাড়া নতুন প্ল্যাটফর্ম। তারা চেষ্টা করছে। এত ডেটা। তাদেরও পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। এ জন্য খানিকটা সমস্যা হচ্ছে। তবে ঠিক হয়ে যাবে। তবে মূল কারণ হিসেবে কোনো কোনো কেন্দ্রে চাপ বেশিকেই মূল কারণ হিসেবে দেখছেন তারা।
এ ব্যাপারে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৩০ হাজার নিবন্ধন হয়ে গেছে। এখানে আর কেউ নিবন্ধন করতে পারবে না। এখানে প্রতিদিন যদি দুই হাজার করে লোককে টিকা দেওয়া হয়, তাহলে সব লোককে টিকা দিতে ১৫ দিন লেগে যাবে। অনেক জায়গায় আজ নিবন্ধন করলে পরের দিনই তারিখ পেয়ে যাচ্ছে। তারপরও মানুষ অভিযোগ করে, নিবন্ধন করেছি, ডেট পাচ্ছি না। তারা সঠিক জায়গায় নিবন্ধন করেনি। ভালো জায়গা না দেখে যেকোনো কেন্দ্রেই নিবন্ধন করা উচিত। কারণ সব কেন্দ্রেই টিকাদান পদ্ধতি একই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিবন্ধিত ব্যক্তিকে কেন্দ্র বাছাই করে দিতে পারে কি না, জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা বণ্টন করে দিলে অসুবিধা হবে। কেউ ধানম-ি থেকে নিবন্ধন করেছেন। তাকে আমরা উত্তরায় কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালে দিলাম। তখন মানুষ সহজে টিকা দিতে পারবে না।
বাদ পড়া মানুষকে টিকায় আনার পরামর্শ : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জনস্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ডা. আবু জামিল ফয়সাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, এখন পর্যন্ত টিকার প্রতি নারীদের আগ্রহ খুবই কম, পুরুষের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ। নিম্নবিত্ত গরিব, দিনমজুর এরা তো নেই। কোনোমতেই আসেনি। এখন যারা আসছে না, তাদের আসার কোনো উপায় নেই। এখন তাদের কাছে যেতে হবে। সে জন্য আউটরিচ করতে হবে। এর মানে গ্রামে এক সপ্তাহে এক দিন টিকা দেওয়া। যেদিন টিকা দেওয়া হবে, তার আগের দিন ওই গ্রামের মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে, নানাভাবে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে তাদের জানাতে হবে। এভাবে এখন সরকারের ইপিআই কর্মসূচির মাধ্যমে বাচ্চাদের টিকা দেওয়া হয়। এটা শুরু করতেই হবে। আমরা মনে করেছিলাম বয়স্ক লোকদের বললেই চলে আসবে। কিন্তু আসছে না। বয়স্ক লোক, গ্রামের লোক এবং শহরের দিনমজুর রিকশাওয়ালা, বস্তির বাসিন্দা এই শ্রেণির লোক যে নিজেদের থেকে টিকা নিতে আসবে না, সেটা দুই সপ্তাহে বোঝা গেছে। এদের কাছে যেতে হবে। এটা চিন্তা করে উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারের লোকজনদের সঙ্গে এনজিওর লোকজনদের কাজে লাগিয়ে এই শ্রেণির মানুষের কাছে টিকা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। এটাই প্রধান চিন্তার বিষয় হওয়া উচিত।