পুলিশ সদস্যদের কাঁধে বা হাতে ভারি বন্দুক বহনের দিন ফুরাচ্ছে। কোমরের বেল্টের সঙ্গে যুক্ত হোলস্টার থাকবে উরুতে বাঁধা; তাতে থাকবে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র। হ্যান্ড কাফ, ওয়ারলেস, পানির বোতলও থাকবে বেল্টে।
এবারের বিজয় দিবস থেকেই নতুন এই ট্যাকটিক্যাল বেল্ট পাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। প্রথমে ঢাকা মহানগর পুলিশের সাত হাজার ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের তিন হাজার পুলিশ সদস্যকে এই বেল্ট দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশের পুলিশ সদস্যরা এটি পাবেন।
মঙ্গলবার রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ নতুন এই ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন।
মাঠ পর্যায়ে কাজ করার সময় পুলিশ সদস্যদের হাত খালি রাখতে উন্নত বিশ্বের আদলে এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে বলে জানান আইজিপি।
‘পুলিশে সর্বাধুনিক অপারেশনাল গিয়ার চালুকরণ’ নামে নতুন এই ব্যবস্থা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ট্যাকটিক্যাল বেল্ট অ্যান্ড অ্যাকসেসরিজের মধ্যে রয়েছে থাই হোলেস্টার উইথ আর্মস, এক্সপান্ডেবল ব্যাটন, হ্যান্ড কাফ, ওয়ারলেস, টর্চ লাইট, ওয়াটার বটল, মাইক্রো ফোন।
সংবাদ সম্মলনে জানানো হয়, পুলিশ সদস্যদের কর্মদক্ষতা ও অপারেশনাল সক্ষমতা বাড়িয়ে দায়িত্ব পালনের সময় হাত খালি রাখা, রুটিন দায়িত্ব পালনের সময় ভারি ও বহনে কষ্টকর লম্বা অস্ত্রের পরিবর্তে হালকা ও সহজে বহনযোগ্য ছোট অস্ত্র ব্যবহার করা, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতে বেশি হতাহতের ঘটনা এড়াতে লম্বা ব্যারেলের অস্ত্রের ব্যবহার ধারাবাহিকভাবে কমিয়ে আনাই এর উদ্দেশ্য।
তাছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালন সহজ ও আরামদায়ক করা, ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার ধারা থেকে বেরিয়ে আসা, বিশ্বের অন্যান্য আধুনিক দেশের মত বাংলাদেশ পুলিশকে গড়ে তোলা এবং পুলিশ ও জনগণের মধ্যে মানসিক দূরত্ব কমিয়ে এনে পুলিশি সেবাকে আরও সহজ করতে এই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বলেন, “আগামীকাল থেকেই বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে এই ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে চাই। আগামী এক মাসে এই ব্যবস্থা ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রবর্তন করা সম্ভব হবে। এরপর অন্যান্য নগরী, তারপর জেলা ও পরবর্তিতে ধাপে ধাপে গ্রামেগঞ্জে এই ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে।”
তিনি বলেন, “রুটিন দায়িত্ব পালনের সময় লং রাইফেল ব্যবহার করতে হবে না। লাঠি ব্যবহার করতে হবে না। বাটনে চাপ দিলে লাঠির মত একটি স্টিক বের হবে। কাজ শেষে তা আবার বাটনে চাপ দিয়ে রেখে দিতে পারবে। রাতে দায়িত্ব পালনের জন্য টর্চ লাইট থাকবে।
“কোনো ধরনের অস্বস্তি ছাড়াই অস্ত্রসহ অন্যান্য জিনিসপত্র থাকবে। এগুলো হল হার্ডওয়ারের পরিবর্তন। আমাদের সফটওয়্যারেরও পরিবর্তন করতে হবে। সফটওয়্যার অর্থ হচ্ছে আচরণ ও মনোজগতের পরিবর্তন করতে হবে।”
এক প্রশ্নে আইজিপি বলেন, “এসব অস্ত্র আগে থেকেই কেনা আছে। প্রতিবছর আমাদের জন্য বাজেট থাকে, সেখান থেকেই করা হয়েছে। আগের অস্ত্রগুলোও ব্যবহার হবে। বিভিন্ন অপারেশন ও পাহারা দেওয়ার কাজে সেগুলো ব্যবহার করা হবে।”
ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনারের নেতৃত্বে কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
সূত্রঃবিডি নিউজ ২৪