ডেস্ক নিউজ
আন্তঃনগর ট্রেনে দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহনে আবারও দেওয়া হবে স্ট্যান্ডিং টিকিট। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধের বর্তমান বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিটও বিক্রি করা শুরু হবে। মোট আসনের ২০ শতাংশ বিক্রি হবে স্ট্যান্ডিং টিকিট।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক ম্যানেজারের (সিসিএম) কার্যালয়ের চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী এর সত্যতা নিশ্চিত করে সমকালকে বলেছেন, রেল মন্ত্রণালয় দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহনের অনুমতি দিয়েছে।
করোনা সংক্রমণ রোধের ‘লকডাউনে’ ৬৭ দিন বন্ধ থাকার পর ২০২০ সালের ৩১ মে থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। সামাজিক দূরত্ব মানতে তখন আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করা হত। করোনার প্রকোপ কমে আসায় ওই বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ‘যত সিট তত যাত্রী’ পরিবহন শুরু হয় ট্রেনে। কিন্তু দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলা বন্ধে বন্ধ করা হয় স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি।
এ সিদ্ধান্তের ফলে টিকিট সংকটের কারণে বহু যাত্রী ট্রেন চড়তে পারছেন না। সব আসনের টিকিট বিক্রির পরে কেউ জরুরি প্রয়োজনেও টিকিট পাচ্ছেন না। এ পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন ট্রেনের কর্মীরা। আগে যখন দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার অনুমতি ছিল, তখন যাত্রীর স্ট্যান্ডিং টিকিটের দাম পেত রেল। কিন্তু স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি বন্ধ হওয়ায় দাঁড়িয়ে যাওয়া যাত্রীর কাছ থেকে নেওয়া টাকা যাচ্ছে কর্মীদের পকেটে।
গত ৯ জানুয়ারি ঢাকা-ময়মনসিংহ-মোহনগঞ্জ রুটের ‘হাওর এক্সপ্রেসে’ এ চিত্র দেখা যায়। গত ১১ জানুয়ারি জামালপুর-ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটের ‘ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস’ ট্রেনেও দেখা যায় প্রতি বগিতে ২০-২৫ জন করে দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলা হয়েছে।
হাওর এক্সপ্রেসে দেখা যায়, ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত যাত্রী প্রতি ২০০ টাকা করে নিচ্ছেন ট্রেনের নিরাপত্তা কর্মী ও অ্যাটেনডেন্টরা। তবে ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেসে দেখা যায়, টিকিট পরিদর্শক এসে জরিমানা করছেন দাঁড়ানো যাত্রীদের। যদিও তাদের সবারই বক্তব্য ছিল, রেলের কর্মীদের টাকা দিয়েই তারা ট্রেনে উঠেছেন।
সরদার সাহাদাত আলী সমকালকে বলেন, টাকার বিনিময়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার শত শত অভিযোগ এসেছে। কিন্তু টিকিট পরিদর্শকসহ পর্যাপ্ত কর্মকর্তা না থাকায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে রেলওয়ের প্রস্তাবে মন্ত্রণলায় ২০ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। কোনো ট্রেনে ৫০০ আসন থাকলে সর্বোচ্চ ১০০ যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে পারবেন স্ট্যান্ডিং টিকিটে।
করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারে নির্দেশনায় গত শনিবার থেকে আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলছে ট্রেন। অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানিয়েছেন, আবার যখন থেকে পুরো যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হবে, তখন থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিটও বিক্রি করা হবে।