ডেস্ক নিউজ
দীর্ঘ নয় মাসের এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্বের মানচিত্রে জেগে উঠে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র। উন্নত দেশগুলোর কাছে যার তকমা মিলে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে। কিন্তু মাত্র ৫০ বছরের ব্যবধানে আজ বিশ্বের বুকে স্বমহিমায় উজ্জ্বল বাংলাদেশের। ডিজিটালাইজেশনের মোড়কে আবরিত পুরো দেশ। যা সম্ভব হয়েছে সফল বিদ্যুতায়নের জন্য। ইতোমধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণায় আলোর মূর্ছনায় ভাসছে দেশ। উদ্বোধন হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুত কেন্দ্র। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্বের ১৩তম আল্ট্রা-সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিসম্পন্ন বিদ্যুত কেন্দ্রটি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে যোগ হলে বিদ্যুত খাতে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। আর এরই স্বীকৃতি হিসেবে বিদ্যুত বিভাগ লাভ করল ২০২২ এর স্বাধীনতা পুরস্কার। এর মাধ্যমে সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল অগ্রযাত্রা শুরু হলো বাংলাদেশের।
ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষিনির্ভর অর্থনীতির খোলস থেকে বেরিয়ে এসে শিল্পায়নের ছোঁয়ায় অর্থনীতির মজবুত ভিত গড়তে দেশে একশ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। শিল্পনির্ভর ভবিষ্যত বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিদ্যুত খাতকে দেয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এরই ধারাবাহিকতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে একের পর এক বিদ্যুতের মেগা প্রকল্প। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার উদ্বোধন করা হয়েছে পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুত কেন্দ্রটি।
শতভাগ বিদ্যুতায়ন, পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্রের উদ্বোধনসহ ডিজিটালাইজেশনের নতুন ধাপ বিষয়ে বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জনকণ্ঠকে বলেন, গ্রাহকদের কাছে ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। স্থাপন করা হচ্ছে প্রি-পেমেন্ট মিটার। স্মার্ট মিটারের আওতায় আনার জন্য প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
বিদ্যুত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৮ লাখ। গত ১৩ বছরে ৩ কোটি ১৩ লাখ বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ২১ লাখ।
২০০৯ সালে দেশে মোট বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট, বর্তমানে এ ক্ষমতা ২৫ হাজার ৫১৪ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্যসহ)। ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুত কেন্দ্র ছিল ২৭টি, বর্তমানে বিদ্যুত কেন্দ্র ১৫০টি। ১৩ হাজার ২১৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও ৩৩টি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। ২০০৯ সালে বিদ্যুতের বিতরণ লাইন ছিল ২ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার, বর্তমানে ৬ লাখ ২১ হাজার কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে মানুষের কাছে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও দুর্গম এলাকার মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় আনতে ৬০ লাখের বেশি সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে।