ডেস্ক নিউজ
২০২৩ সালে সিটি করপোরেশন ও ২০২৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই খুলনায় তৃণমূলে মাঠ গোছাতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। দলে শৃঙ্খলা ও ঐক্য ফেরাতে জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ‘রিহার্সাল’ (মহড়া) হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। তারা বলছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভুল করলে তার প্রভাব সিটি করপোরেশন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পড়বে। ফলে তৃণমূলে দলের শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
এদিকে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দলের ক্ষোভ দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নিরসনে গতকাল খুলনায় বৃহৎ আকারে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। খুলনা ক্লাবে অনুষ্ঠিত এ সভায় জেলা ও মহানগর পর্যায়ের নেতারা, সংসদ সদস্য, ৯টি উপজেলা ও ৬৮টি ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ নেতারা, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ মো. হারুনুর রশীদ। জানা যায়, সর্বশেষ খুলনায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দলীয় কোন্দলের কারণে বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা পরাজিত হয়। এ অবস্থায় নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব নিরসন করতে আগেভাগেই মাঠে নেমেছেন স্থানীয় নেতারা। ইউপি নির্বাচনে বিজয়ী বিদ্রোহী প্রার্থীদের উদ্দেশ করে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও কেসিসি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, ‘পরীক্ষিত নেতা-কর্মীরা ভুল করলে দলীয় স্বার্থে কখনো তা মেনে নিতে হয়। ইউপি নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী অনেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তারা যদি এখন জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বাইরের প্রার্থীদের কাছে যান। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাহলে তা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।’ খুলনা-৪ আসনে সংসদ সদস্য আ. সালাম মুর্শেদী জানান, ‘একটি দল (বিএনপি) নির্বাচন না করার কারণে আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে ও তারা এই সুযোগটা নিয়েছে। তারাই আমাদের বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে, তারা বিদ্রোহীদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছে। তার মানে কি আমরা জনপ্রিয়তা হারিয়েছি? তা নয়। তবে দলের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে। আমি মনে করি ইউনিয়ন পর্যায় থেকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ঘরোয়াভাবে বসতে হবে। এতে ক্ষোভ কষ্ট থাকলে নিরসন করা সম্ভব হবে।’ নেতারা বলেন, বিগত ইউপি নির্বাচনে খুলনায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের থেকেও কোনো উপজেলায় বিদ্রোহীরা বেশি নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যেও ক্ষোভ থাকতে পারে। তাদের নিয়েও জ্যেষ্ঠ নেতাদের বসতে হবে। দলে বিরোধ তৈরি করতে গোপনে ষড়যন্ত্র হতে পারে উল্লেখ করে জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি সোহরাব আলী সানা বলেন, ‘বোগলে ইট রাখলে আপনি ও এলাকার নেতা-কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা যারা ২০২৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রস্তুতি নিচ্ছি তারা ক্ষতিগ্রস্ত হব। আজকে যারা নেতার আসনে বসে আছি, পরাজিত হলে দর্শকের সারিতেও জায়গা হবে না।’ খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল বলেন, দলে পদ-পদবি নিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। কিন্তু বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। খুলনায় জেলা পরিষদ নির্বাচন, কেসিসি নির্বাচন ও সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আমরা তৃণমূলে দলের ঐক্যবদ্ধ শক্তির প্রমাণ দিতে চাই।