ডেস্ক নিউজ
কোভিড মহামারীর জড়তা কাটিয়ে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে চাঙাভাব অব্যাহত রয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রপ্তানি আয় বেড়েছে ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) মঙ্গলবার যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, জুলাই-নভেম্বর সময়ে বাংলাদেশ থেকে একহাজার ৯৭৯ কোটি ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
এই আয় ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি এবং চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ বেশি।
একক মাস হিসেবে নভেম্বরেও রপ্তানি আয়ে ঊর্ধ্বগতির ধারা বিদ্যমান ছিল। এ মাসে বিদেশে পণ্য বিক্রি করে ৪০৪ কোটি ১৩ লাখ ৯০ হাজার ডলার আয় করেছেন দেশের ব্যবসায়ীরা।
এই আয় গত অর্থবছরের নভেম্বরের চেয়ে ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং গত মাসের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি।
বরাবরের মতোই রপ্তানি প্রবৃদ্ধির এই ধারায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে তৈরি পোশাক খাত। তবে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন হানা দেওয়ার পর ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন রপ্তানিকারকরা।
তৈরি পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কোভিডের বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর ক্রেতারা ব্যাপকভাবে রপ্তানি আদেশি দিয়েছিলেন, যার প্রভাবে এখনও রপ্তানি আয় ইতিবাচক ধরায় রয়েছে। তবে নতুন করে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার খবরে ভবিষ্যতের ক্রয়াদেশগুলোতে তারা খুব হিসাব-নিকাশ কষছেন।
“ফলে আমাদের মধ্যেও শঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, ভবিষ্যতে ক্রয়াদেশ কমে যায় কিনা। এখন পুরো পরিস্থিতিটি মানুষের ওপর ওমিক্রনের প্রভাবের ওপর নির্ভর করছে।”
গত মাসে জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের প্রভাবে রপ্তানি আয় কিছুটা কম হয়েছে বলে এই ব্যবসায়ীর ধারণা।
ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বরাবরের মতো চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রপ্তানি আয়ে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে তৈরি পোশাক খাত। প্রায় ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধিসহ এ খাত থেকে রপ্তানি আয় এসেছে এক হাজার ৫৮৫ কোটি ৬২ লাখ ডলার।
খাতভিত্তিক রপ্তানির তথ্য বিশ্লেষণ দেখা যায়, শক্ত অবস্থানসহ ঘুরে দাঁড়ানো তৈরি পোশাক খাত, হোম টেক্সটাইল এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। একক মাস হিসেবে নভেম্বরে এ খাত থেকে রপ্তানি হয়েছে ৯ কোটি ডলার।
নভেম্বরে ১২ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হলেও এ খাতের সার্বিক রপ্তানি ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ পিছিয়ে আছে। এর আগের দুই মাসেও পাটজাত পণ্য রপ্তানি যথাক্রমে ২৪ ও ৩০ শতাংশ পিছিয়ে ছিল। অর্থাৎ এই খাতটির রপ্তানি ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রপ্তানি আয় আগের বছরের চেয়ে ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ পিছিয়ে ছিল। অগাস্টে একক মাস হিসেবে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ হলেও সার্বিক রপ্তানি নেতিবাচক ধারা থেকে বের হতে পারেনি।
এরপর সেপ্টেম্বরের প্রবৃদ্ধিতে ভর করে তিন মাসের সার্বিক রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ বাড়ে। আর নভেম্বরের পর সার্বিক প্রবৃদ্ধি ২৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।