ডেস্ক নিউজ
প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ আর কোনোদিন পিছিয়ে থাকবে না বলে জনগণের কাছে ওয়াদা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়। রাজধানীর হোটেল রেডিসনে রোববার সন্ধ্যায় দেশে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের সর্বশেষ প্রযুক্তি ফাইভ-জি উদ্বোধন করে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুক্ত হন জয়।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আজ আপনাদের মোবাইল সেক্টরে যাত্রার কথা একটু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে যখন প্রথম মোবাইল চালু হয়, তখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিলো। তারা একটমাত্র কোম্পানিকে লাইসেন্স দিয়েছিল। সেটি ছিলো বিএনপির এক মন্ত্রীর কোম্পানি।
‘তখন শুধু বড়লোকেরাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারতো। এক মিনিটের জন্য ১০ টাকা চার্জ করতো। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর আরো অনেক কোম্পানিকে লাইসেন্স দেয়। তখন থেকেই মোবাইল ফোন ছড়িয়ে যায় এবং খরচ কমে আসে। এটা সম্ভব করেছে আওয়ামী লীগ।’
জয় বলেন, ‘২০০৮ সালে আমরা ফিরে এসে কী দেখলাম? টেকনোলজিতে আমরা পিছিয়ে গেছি। যখন সারা বিশ্ব ফোর-জি তে চলে যাচ্ছে তখনও বাংলাদেশ টু-জিতে আটকে আছে। তখন বিটিআরসি একটি অকশন করে।
‘আমরা ক্ষমতায় আসার পরই দেশে থ্রি-জি চালু করি। মোবাইল অপারেটরগুলো এটি দ্রুত ছড়িয়ে দেয়। তখন আমরা উদ্যোগ নেই ফোর-জিতে যাওয়ার। স্পেকট্রাম অকশন করে তখন আমরা ফোর-জি চালু করে দিই। এখন বেশিরভাগ শহরেই ফোর-জি নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। কিছু কিছু গ্রামেও পাওয়া যায়। আমার আশা, মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো সারা দেশেই ফোর-জি ছড়িয়ে দেবে।’
সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আমরা বসে থাকতে চাই না। আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আমরা এটাকে দায়িত্ব মনে করি। আমরা থেমে থাকতে রাজি নই।
‘ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কেমন হবে সেদিকে নজর রেখেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তাই যখন উন্নত দেশে মাত্রই ফাইভ-জি চালু হচ্ছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও ফাইভ-জি চালু করছি। কোনো দেশের চেয়ে আমরা পিছিয়ে থাকতে চাই না।’
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতি আওয়ামী লীগের মধ্যে এই যে দায়িত্ববোধ, তা কোথা থেকে আসে? এটা আসে স্বাধীনতার চেতনা থেকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু থেকে। তিনি (বঙ্গবন্ধু) সব ত্যাগ করেছেন একটিমাত্র স্বপ্নের জন্য। সেটি ছিলো দেশের মানুষের উন্নয়ন।
‘সেই স্বপ্ন ও দায়িত্ববোধের শিক্ষা তিনি দিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী, আমার মাকে। মায়ের কাছ থেকে শেখা। তিনি আমাকে, আমার পরিবারকে এই দায়িত্ববোধ শিখিয়েছেন। দেশপ্রেম ছোট থেকেই আমাদের ঘরে একটি দায়িত্ব-কর্তব্য হিসেবে আমাদের শেখানো হয়। আমাদের পরিবারের সবার মধ্যেই এই আত্মবিশ্বাস যে বাংলাদেশের জন্য কাজ করতে হবে।’
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘এভাবে দেশের জন্য কাজ করবো ভাবিনি। তবে ইচ্ছা ছিলো যা পারি, তাই করবো। আমার অভিজ্ঞতা-শিক্ষা দিয়ে দেশের জন্য কাজ করবো। আমি আইটির মানুষ। আইটি বিষয়ে আমার জ্ঞান দিয়েই ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কাজ করছি।
‘বর্তমান যুগ কানেক্টিভিটির যুগ। নেটওয়ার্ক উন্নত না থাকলে, গতি উন্নত না হলে আমরা উন্নয়নে পিছিয়ে যাবো। তাই দেশের প্রতি আমার ওয়াদা- আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় আছে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কে আর পিছিয়ে যেতে দেবো না। আমরা সব সময়ই উন্নত টেকনোলজিতে থাকবো।’
ধীরে ধীরে দেশে ফাইভ-জির বিকাশ হবে এমনটা আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘সারা বিশ্বেই ফাইভ-জি খুব অল্প জায়গায় চালু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে যেমন শহরের কয়েকটি জায়গায় ফাইভ-জি আছে, বাংলাদেশের ঢাকাতেও তাই। এটা আস্তে আস্তে আসবে। আমরা এখন পিছিয়ে নেই। আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে উন্নয়নের গতি কমবে না।’
বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে দেশবাসীকে সজাগ থাকার আহ্বানও জানান সজীব আহমেদ ওয়াজেদ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কোনোদিকেই পিছিয়ে নেই। এখন আমরা মধ্যম আয়ের দেশ। আমাদের স্বপ্ন আছে, আগামীতে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত দেশে পরিণত করবো।
আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, ‘সবশেষে বলতে চাই, আমরা ইতিহাসে দেখেছি যে যখনই বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়েছে তখনই কিছু ষড়যন্ত্র আমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। নির্বাচনের আগে সেই ষড়যন্ত্র বেড়ে যায়।
‘আর মাত্র দুই বছর পর আরেকটি নির্বাচন আছে। আমরা দেখছি, সেই ষড়যন্ত্র আবার শুরু হচ্ছে। দেশে এক শ্রেণির মানুষ আছে, বিরোধী দল, তারা তখন তাদের বিদেশি মালিকদের কাছে নালিশ শুরু করে। হাত পাতে যেন তারা বিএনপিকে ক্ষমতায় বসায়।
‘আপনারা জানেন এরা কারা। আপনাদের সবাইকে সতর্ক করতে চাই। এই ষড়যন্ত্র আমরা সফল হতে দেবো না। এটি সফল হলে কিন্তু ডিজিটাল বাংলাদেশ সফল হবে না। দেশের মানুষ এখন অনেক সতর্ক, অনেক শিক্ষিত। আমরা যতটুকু এগিয়েছি, আমাদের কেউ আর দাবিয়ে রাখতে পারবে না।’