ডেস্ক নিউজ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাপান সফর করেন। তার সেই সফরই আজকের বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছিল। বঙ্গবন্ধু জাপানের আর্থ-সামাজিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির একজন প্রশংসক ছিলেন। তিনি একটি কৃষিভিত্তিক দেশকে শিল্পোন্নত দেশে রূপান্তরের জন্য জাপানি মডেল অনুকরণ করতে চেয়েছিলেন।’
রোববার (২৪ জুলাই) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জাপানের পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার হোন্ডা তারো ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এজেন্সি (জাইকা) প্রেসিডেন্ট তানাকা আকিহিতো। এসময় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের বিষয়ে জানাতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও জাপানের দুই নেতা ২০১৪ সালে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বাংলাদেশে সফরের কথা স্মরণ করেন। শেখ হাসিনা শিনজো আবে হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং তাকে বাংলাদেশের একজন মহান বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন।
এসময় জাপানের নেতারা বলেন, শিনজো আবের বাংলাদেশ সফরে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে একটি ব্যাপক অংশীদারত্বে উন্নীত করেছে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে জাপানের সহায়তা চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জাপানের নেতাদের জানিয়েছেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর বেশ কয়েক বছর কেটে গেছে এবং তারা এখন আমাদের জন্য বোঝা হয়ে উঠেছে।
জবাবে জাপানের পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার হোন্ডা তারো বলেন, ‘আমরাও রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণভাবে প্রত্যাবাসন চাই। এ ইস্যুতে জাপান সবসময় বাংলাদেশকে সমর্থন করছে।’
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাপানের নেতারা অর্থনৈতিক উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছেন। নিজস্ব অর্থায়নে বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে জাপানের নেতা ও জাইকা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সেতুটি বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।’
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মা সেতু ও যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু দেশের দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলকে দেশের অবশিষ্ট অংশের সঙ্গে যুক্ত করেছে। জাপান বাংলাদেশের তিনটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। মহেশখালীতে কয়লাচালিত মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল ও ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল। যা বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশেষভাবে সহায়ক হবে।’
জবাবে জাইকা প্রেসিডেন্ট চলমান তিনটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারের সর্বাত্মক সহায়তার প্রশংসা করেন। জাপানের এ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তোরণেরও প্রশংসা করেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি উপস্থিত ছিলেন।