ডেস্ক নিউজ
দেশের ভাবমূর্তি (ইমেজ) ক্ষুন্ন হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন মন্তব্য ও লেখার বিষয়ে সতর্ক করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় গতকাল রবিবার এক আসামির জামিন শুনানিকালে আসামির আইনজীবীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশের ইমেজ সবার আগে। লিখেন, কিন্তু এরকম কিছু করবেন না, যা একজন শিক্ষিত মানুষের জন্য শোভা পায় না। আমেরিকাতেও স্যাটায়ার (ব্যঙ্গাত্মক রচনা) করে। কিন্তু আমাদের দেশের মতো এত কুৎসিতভাবে করে না।’
তিন বিচারপতির ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ জামিনের আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আসামিকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি খারিজ করে দেয়। একই সঙ্গে আসামিপক্ষকে সতর্ক করে আদালত।
প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে কটাক্ষ ও নেতিবাচক বিভিন্ন পোস্ট ও ছবি বিকৃত করে ফেইসবুকে পোস্ট, শেয়ার করা ও ধর্মীয় উসকানির অভিযোগে গত বছরের মার্চের মাঝামাঝি সময়ে সিলেটে গোলাম সারোয়ারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। এ মামলায় গত বছরের ১১ অক্টোবর তার অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আদেশ দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরে ১৮ অক্টোবর চেম্বার আদালত হাইকোর্টের দেওয়া আদেশটি স্থগিত করে। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি শুনানির জন্য আসে।
আদালতে গোলাম সারোয়ারের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) বিশ^জিত দেবনাথ। অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বলেন, ‘হাইকোর্টের দেওয়া আদেশটি আপিল বিভাগে বহাল রয়েছে। মেডিকেল গ্রাউন্ডে তাকে জামিন দিয়েছে আপিল বিভাগ।’ ডিএজি বিশ^জিত দেবনাথ বলেন, ‘আসামিকে জামিন দিয়েছে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কিছু লিখতে সতর্ক করেছে আদালত।’
শুনানিতে আইনজীবী আসাদুজ্জামান আদালতকে জানান, আসামি অসুস্থ তার হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা রয়েছে। প্রায় একবছর ধরে তিনি কারাগারে রয়েছেন। মামলায় এখন পর্যন্ত অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়া হয়নি। হাইকোর্ট স্বাস্থ্যগত কারণেই তাকে জামিন দিয়েছিল। এ সময় প্রধান বিচারপতি আইনজীবীকে সতর্ক করে বলেন, ‘দেশের ইমেজ সবার আগে। এটি যেন নষ্ট না হয়। আমেরিকাতেও মানুষ স্যাটায়ার করে। কিন্তু আমাদের দেশের মতো এত কুৎসিতভাবে নয়। একজন শিক্ষিত মানুষ কীভাবে এমন লিখতে পারেন? স্যাটায়ার করেন কিন্তু পরিশীলিতভাবে করেন। এমনভাবে নয়, যাতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়। ভবিষ্যতে এমন করলে আর জামিন নয়।’