ডেস্ক নিউজ
বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কের পায়রা নদীর ওপর লেবুখালী সেতুর (পায়রা সেতু) নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২০ সালের জুনে সেতুটি চলাচল উপযোগী হবে। এর ফলে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা, তৃতীয় সমুদ্র বন্দর ও পটুয়াখালী থেকে বরিশাল যেতে আর কোনো ফেরি থাকবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালী ফেরিঘাটের পায়রা নদীর ওপর ‘পায়রা সেতু (লেবুখালী সেতু)’ নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালী সফরে গিয়ে লেবুখালীতে পায়রা নদীর দক্ষিণ পাড়ে ফেরিঘাট এলাকায় চার লেনের এই পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর করেন।
বাংলাদেশ সরকার ও কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমি ডেভেলপমেন্ট (কেএফএইডি) এর অর্থায়নে এই সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। এই সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে পায়রা নদীর ওপর সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে সেতু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেতুর পাইলিং নকশা পরিবর্তন ও নদী শাসনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ বিলম্বিত হওয়ায় নির্মাণ কাজের সময় বর্ধিত করা হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২০ সালের জুনে সেতুটি চলাচল উপযোগী হবে। সেতুটি চালু হলে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা, তৃতীয় সমুদ্র বন্দর ও পটুয়াখালী থেকে বরিশাল যেতে আর কোনো ফেরি থাকবে না। এছাড়াও নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু চালু হলে রাজধানী ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় সড়ক পথে আর কোনো ফেরি থাকবে না।
সেতু নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্টরা জানায়, সেতুটির দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪৭০ মিটার, প্রস্থ ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার। সেতুটি নির্মাণ করছে চীনের লং জিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। ৩১টি পিলার ও ৩২টি স্প্যানের ওপর নির্মিত হবে সেতুটি। সেতুটি নদীর জলস্তর থেকে ১৮ দশমিক ৩০ মিটার উঁচু হবে। ফলে নৌযান চলাচলে অসুবিধা হবে না। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে আলোকিত হবে এই সেতুটি। এছাড়াও সেতুর উভয় দিকে থাকছে মোট সাত কিলোমিটার এ্যাপ্রোচ সড়ক।
পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ও পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই অঞ্চলে ভারী শিল্প-কলকারখানা গড়ে তোলার অবকাঠামো সুবিধা রয়েছে। উদ্যোক্তাদের বেশি আগ্রহ পর্যটন ও পায়রা বন্দরকেন্দ্রিক ব্যবসাবাণিজ্য। পদ্মা সেতু হচ্ছে, পায়রা সেতু চালু হলে পটুয়াখালীর সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগে ফেরি থাকবে না। তাই আমরা আশা করছি, ধীরে ধীরে এই এলাকায় ভারী শিল্প স্থাপনে উদ্যোক্তারা আরো বেশি এগিয়ে আসবে।
পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ শরীফ সজীব বলেন, নদীর নাব্যতা রক্ষার দিক বিবেচনায় রেখে আধুনিক নকশায় নদীর মাঝে একটি পিলার রেখে এই সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতু, সংযোগ সড়ক ও নদী তীর রক্ষা একই প্যাকেজের আওতায় হচ্ছে। ইতিমধ্যে সেতুর ৬২ ভাগের মতো কাজ সম্পন্ন হয়েছে। টোল প্লাজাসহ আনুসঙ্গিক কাজের জন্য কিছু জমি অধিগ্রহণ হলে নির্ধারিত সময় ২০২০ সালের জুন মাস নাগাদ সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি। তবে চলাচলের উপযোগী করতে দুই-এক মাস সময় বেশি লাগতে পারে।