থামছেই না ধর্ষণের সালিশ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরাধীদের বাঁচাতে সালিশ করে গ্রামের প্রভাবশালীরা। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, ধর্ষণের মতো অপরাধ মীমাংসার চেষ্টায় বেশিরভাগ সময়ই অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। সালিশকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়ে তা বন্ধে কঠোর হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন সিনিয়র আইনজীবীরা।
সবুজে ঘেরা, প্রাণ-প্রকৃতির সৌন্দর্যমণ্ডিত গ্রাম, ইটকাঠের নগর সবখানেই আতঙ্ক আর কালিমা লেপে দেয় ধর্ষণের মতো অপরাধ। আর ধর্ষককে আইনের হাতে তুলে দেয়ার বদলে যখন সালিশের নামে তাকে রক্ষার অপচেষ্টা চলে, তখনই লঙ্ঘিত হয়ে মানবাধিকার, সূচনা হয় আরও বড় অপরাধের। তেমনই এক ঘটনা ঘটেছে ঢাকার অদূরে ধামরাইয়ে।
গত সপ্তাহে ধামরাইয়ের রামরাবণ গ্রামে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণ করা হয়। কিন্তু ধর্ষককে বাচাঁতে মধ্যরাতে সালিশ বসায় গ্রামের মাতবরসহ ১০ প্রভাবশালী। খবর পেয়ে পুলিশ ভুক্তভোগী সাড়ে ১১ বছরের শিশুটিকে উদ্ধার করে ধর্ষককে গ্রেফতার করলেও সালিশে থাকা সেই প্রভাবশালীরা এখনও ঘুরছেন মুক্তবাতাসে। আর তাই উদ্বিগ্ন ভুক্তভোগী পরিবার।
ভুক্তভোগী পরিবারের একজন বলছেন, ‘এরকম শিশুগুলোকে অত্যাচার করছে। বিচারে কোন আইন নাই, তার মধ্যে বিচার-সালিশ করছে রাত দেড়টা পর্যন্ত।’
আরেক স্বজন জানান, মেয়েকে বলেছে, আমার কাছে যদি না যাস তোর ছোট ভাইরে মাইরা হালামু। জীবনটা নষ্ট করল, এখন কই বিয়ে দিমু।
স্বজনরা বলেন, আমরা সঠিক বিচার চাই, ওর ফাঁসি চাই আমরা।
ধর্ষককে বাঁচাতে গ্রাম্য সালিশের ভূমিকায় উদ্বিগ্ন মানবাধিকার কর্মীরা।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান বলেন, ‘এই ধরনের একটা বেআইনি কাজ করার জন্য তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে এবং তাদের অপরাধের আওতায় আনা যাচ্ছে না।’
ভুক্তভোগীরা চাইলে সালিশকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ রয়েছে বলে জানান সিনিয়র আইনজীবীরা।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘তারা যতই প্রভাবশালী হন না কেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিবে। এই অপরাধের জন্য তাদের বিচার করা হবে এটা নিশ্চিত থাকবেন।’
সম্প্রতি ধর্ষণের ঘটনায় কেউ যেন সালিশ করতে না পারে সেজন্য আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।