নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরে এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠায় অভিযুক্ত সাজেদুর রহমান সাকিবের নামে বরাদ্দকৃত অর্কিড আইসিটি ওয়ার্ল্ডের ২য় তলার স্পেস বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ ও সহকারী পরিচালক হিরণ বড়–য়া অভি স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়। এর আগেও গত ১৩ এপ্রিল একই বিভাগের রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী এস.এম. আল মামুন অর্কিড আইসিটি ওয়ার্ল্ডের স্পেসটি বাতিল করে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছিল মাসিক স্পেস ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল না দেয়া সহ পরিচ্ছন্নতাকর্মী শুভ জমাদারের সাথে অশোভন আচরণ সহ ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেওয়ার। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সেই স্পেস বাতিলের প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়ন হয়নি।
নাটোরের শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম স্পেস বাতিলের চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত শনিবার কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিতে আসা এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা করে অর্কিড আইসিটি ওয়ার্ল্ডের পরিচালক সাকিব। পরে ভুক্তভোগীর মায়ের মামলার প্রেক্ষিতে সোমবার রাত ৮টার দিকে পুলিশ সাকিবকে আটক করে। বিষয়টি জানার পর বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ স্কুল ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় আইসিটি পার্কের ব্যবসায়িক পরিবেশ সমুন্নত রাখার স্বার্থে অর্কিড আইসিটি ওয়ার্ল্ডের স্পেসটি বাতিল করে চিঠি পাঠায় ।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত্তা নাছিম আহম্মেদ জানান, যৌন পীড়ন বা যৌন হয়রানীর অভিযোগে নির্যাতিত ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নাটোর থানায় সাকিবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার বিকেলে নাটোর সদর আমলী আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য নাটোর শহরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ওই ছাত্রী গত দশ দিন আগে নাটোরের শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত অর্কিড আইসিটি ওয়ার্ল্ডে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি হন। ভর্তির পর থেকে তিনি সেখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছিলেন। গত বৃহস্পতিবার অর্কিড আইসিটি ওয়ার্ল্ডের পরিচালক সাকিব ওই শিক্ষার্থীকে ফোন করে শনিবার সকাল ৮টা থেকে প্রশিক্ষণ শুরু হবে বলে জানান। ওই শিক্ষার্থী শনিবার সকাল আটটার মধ্যে প্রশিক্ষণের জন্য সেন্টারে আসেন। এ সময় অন্য কোনো শিক্ষার্থীরা না থাকার সুযোগে ভূক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে কক্ষের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা শুরু করেন অভিযুক্ত সাকিব। বাধা দেওয়ায় এ সময় জ্বলন্ত সিগারেট মুখে ঢুকিয়ে দফায় দফায় ধর্ষণের চেষ্টা চালায় সাকিব। দীর্ঘক্ষণ মেয়েটির সাথে ধস্তাধস্তির ঘটনার এক পর্যায়ে অন্য শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণের জন্য আসতে শুরু করলে ছাত্রীটিকে ছেড়ে দেয় সাকিব। ভূক্তভোগী ছাত্রীটি ভয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তার পরিবারকে কিছু না জানালেও সোমবার সে তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়। পরে তার পরিবারের সদস্যরা অর্কিড আইসিটি ওয়ার্ল্ডে এসে পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান সাকিবকে মারপিট করতে উদ্যাত হন। শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের সহকারী প্রোগ্রামার শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাছিম আহমেদকে জানান। পরে পুলিশ গিয়ে অভিযুক্ত সাকিবকে আটক করে রাতেই থানায় নিয়ে আসেন।