নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের নলডাঙ্গায় ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবন হত্যা মামলায় তদন্ত শেষে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার আপন দুই ভাই ফয়সাল শাহ ফটিক এবং আলিম আল রাজিকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। নাটোর সিনিয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। হত্যাকান্ডের ৪ মাস ১৩ দিন পর চলতি বছরের গত ৩১ জানুয়ারী তদন্ত শেষে নাটোর আদালতে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদসহ তার দুই ভাইকে অভিযুক্ত করে এ চার্জশিট দাখিল করেন। গত ১৯ ফেব্রায়ারী দাখিলকৃত অভিযুক্তপত্রটি নাটোর সিনিয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গ্রহন করে।
নিহত জামিউল আলীম জীবন উপজেলার রামশাকাজিপুর গ্রামের ফরহাদ হোসেন শাহের ছেলে ও নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক এস এম ফিরোজের ভাতিজা এবং নলডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা।অভিযুক্ত আসামীরা হলেন, উপজেলার রামশাকাজিপুর গ্রামের আনছার শাহের ছেলে আসাদুজ্জামান আসাদ, তিনি নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান, আপন দুই ভাই এস এম ফয়ষাল শাহ ফটিক ও আলিম আল রাজি। নিহত ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবন উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ সম্পর্কে তারা চাচা ও ভাতিজা ।
নলডাঙ্গা থানা পুলিশ ও অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়,নলডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবন তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭ টার দিকে নলডাঙ্গা উপজেলার রামশাকাজিপুর আমতলী বাজারে ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবনকে বাঁশের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এ সময় জীবন মাটিতে পড়ে গেলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে এবং বুকের হৃদপিন্ড বরাবর লাথি মারে বলে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয় । এ সময় জামিউল আলীম জীবনের বাবা ফরহাদ হোসেন ছেলেকে বাচাঁতে এগিয়ে এলে তাকেও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। আহত অবস্থায় জামিউল আলীম জীবন ও তার বাবা ফরহাদ শাহকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার ৫ দিন পর ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টম্বর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আইসিউইতে ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবন মারা যায়। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবনের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার দুই ভাই ফয়ষাল শাহ ফটিক এবং আলিম আল রাজিকে আসামী করে নলডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ হত্যা মামলাটি ৪ মাস ১৩ দিন পর তদন্ত শেষে চলতি বছরের গত ৩১ জানুয়ারী নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার দুই ভাই ফয়ষাল শাহ ফটিক এবং আলিম আল রাজিকে অভিযুক্ত আদালতে চার্জশিট (অভিযোগ পত্র) দাখিল করেন নলডাঙ্গা থানার এস আই মানিক কুমার চৌধুরী।
এ মামলার বাদী নিহত জামিউল আলীম জীবনের মা জাহানারা বেগম বলেন,আমার নিষ্পাপ ছেলেকে যারা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কামাল বলেন,আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবন হত্যা মামলার মেডিকেল রির্পোটে মাথায় আঘাতে তার মৃত্যু হয়। আমরা তদন্ত শেষে আলোচিত এ মামলার চার্জশিট আদালতে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী দাথিল করলে ১৯ ফেব্রুয়ারী আদালত গ্রহন করেছে। ঘটনার পর আলিম আল রাজিকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকী দুই আসামী উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার আরেক ভাই এস এম ফয়শাল শাহ অন্য একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালত জামিন না মুঞ্জুর জেল হাজতে প্রেরণ করেন।