নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলায় মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্প- আওতায় নির্মিত সেমিপাকা ঘর পেয়ে হাসি ফুটেছে অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে। এখন খুশি আনন্দে দিন কাটছে তাদের।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের নলডাঙ্গা উপজেলায় ১৯৬ জন গৃহহীন ও ভূমিহীনকে বিনামূল্যে জমি ও রঙিন টিন দিয়ে আধাপাকা ঘর করে দিয়েছেন সরকার।
ইতোমধ্যে ১২০টি পরিবারের মধ্যে জমির উপহারের ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৪৫টি ঘরের নির্মাণকাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই তা সুবিধাভোগীদের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে। পিপরুল ইউনিয়নের ঠাকুর লক্ষীকোল গ্রামের ইউপি সদস্য ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মসজিদ মোঃ মজিবর রহমান মজি বলেন,নির্মানাধীন বাড়িগুলোর কিছু জায়গায় ( ঠাকুরলক্ষীকোল তালতলা,কুমদবাটী, চকপাড়া, নশরৎপুর, চকসড়কুতিয়া) নিচু থাকায় টিআর প্রকল্প দিয়ে মাটি ভরাট করা হয়েছে যা মনোরম পরিবেশের উপযোগী করে তুলছে।
পিপরুল মহিলা ইউপি সদস্য পপি বলেন, এক নম্বর ইটে কাজ করা হয়েছে দরজা-জানালা দেওয়া হয়েছে উন্নত মানের কাঠ। ছাউনি লাল সবুজ টিনের।
প্রকল্প কর্মকর্তা ওমর খৈয়াম বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি পরিবারের জন্য উপহারের ঘরে আছে ২টি থাকার কক্ষ, ১টি রান্না ঘর, ১টি করে উন্নত টয়লেট ও ১টি বারান্দা। প্রায় ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রতিটি ঘর নির্মাণ করা হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ কার্যক্রম কে সফল করতে স্থানীয় প্রশাসন দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ঘরগুলো নির্মাণকাজে কাজের শুরু থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর- নওগাঁ সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি রত্না আহমেদ, উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ নিয়মিতভাবে নির্মাণ কাজের কাজ বাস্তবায়ন করতে সহযোগিতা করেছেন। ইউএনও স্যার নিজে উপস্থিত থেকে দেখভাল করেছেন ।কাজের যেন কোনো অনিয়ম না হয় সেদিকে তিনি সর্বদাই বিশেষ নজর রেখেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে আশ্রয় পেয়ে আবেগাপ্লুত উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন কুমদবাটি গ্রামের ময়ফুলি বেগম । তিনি জানান, সারাজীবন অভাব-অনটনের সংসারে শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। পাকাবাড়ি বানানোর চিন্তা কোনোদিন করেননি। তাই বিনামূল্যে জমি ও ঘর পেয়ে তিনি খুশি। দোয়া করি মুজিবের বেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জন্য।
সেই সাথে ধন্যবাদ জানাই নলডাঙ্গা উপজেলার চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ স্যার, নলডাঙ্গা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সুখময় সরকার স্যার, সহকারী ( ভূমি) কমিশনার সুমা খাতুন স্যার,পিআইও ওমর খৈয়াম স্যার, পিআইও অফিসের জহিরুল ভাইকে। মাটি কাটা থেকে শুরু করে ঘর তৈরি পর্যন্ত । নিয়মিত তদারকি করে সুন্দর ঘর আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য ।
পিপরুল ইউনিয়নের আরও উপকারভোগী আয়েশা বেগম বলেন, বিগত কোনো সরকার বিনামূল্যে জায়গাসহ রঙিন টিনে পাকাঘর পাওয়ার এমন স্বপ্ন দেখাতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছেন। তার জন্য দোয়া করেন তিনি।
পিপরুল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কলিম উদ্দিন কলি বলেন, জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকীতে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধান্মন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে সরকারি খরচে মাথা গোজার আশ্রয়স্থল গড়ে দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি করেছিলেন, সেই প্রতিশ্রুতির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করে চলেছেন তিনি। নাটোর-২ আসনের সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুল ভাই ও উপজেলার চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ভাইদের নির্দেশনায় আমার ইউনিয়নে প্রকৃত গৃহহীন ও ভূমিহীনদের তালিকা প্রণয়ন করে নিয়ম মাফিক ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এতে কোনো রকম অনিয়ম হয়নি।
নলডাঙ্গা সহকারী কমিশনার (ভূমি)সুমা খাতুন বলেন, মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী উপ হিসেবে জমির দলিল উপভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুখময় সরকার বলেন, ‘মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যারা ভূমিহীন ও গৃহহীন রয়েছেন তাদেরকে ঘর তৈরি করে দেয়া হচ্ছে। নলডাঙ্গা উপজেলার ঘরগুলো গুণগতমান বজায় রেখে দিকনির্দেশনা অনুযায়ী ঘরগুলোর নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। একইসঙ্গে যারা উপকারভোগী আছেন তাদের সাথেও মতবিনিময় করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী গৃহহীনদের একটা মানসম্মত ও টেকসই ঘর নির্মাণ করে দেয়ার জন্য আমরা সবসময় তদারকি করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এই ঘরগুলো করতে পেরে আমরা নিজেরাও তৃপ্ত। একটি মানুষও যেন গৃহহীন না থাকে প্রধানমন্ত্রীর এই কথাটি যেদিন তিনি মুখ থেকে যখন বের করেছেন। সেই থেকেই আমরা তাঁর নির্দেশনায় তা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করে দিয়েছি। এরা আগামী দিনে ভালো থাকলেই আমাদের এ কাজে নামাটা স্বার্থক ও সফল হবে।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন ভূমিহীন অসহায়রা ঘর পেয়ে খুশি। এখন আর ওদের পথের ধারে পলিথিন মুড়িয়ে ঘুমাতে হবে না। নলডাঙ্গা উপজেলায় কেউ গৃহহীন। থাকবে না।