নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের নলডাঙ্গায় শিশু ধর্ষণের দায়ে আনোয়ার হোসেন বাবু (২৭) ও রইচ উদ্দিন (৩৬) নামে দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও তাদের এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। এ সময় এই মামলা থেকে ৫ জনকে খালাস দিয়েছে আদালতের বিচারক। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় দেন। দন্ডপ্রাপ্ত আনোয়ার হোসেন বাবু নওগাঁর রানীনগর থানার হরিশপুর গ্রামের জাহের আলীর ছেলে এবং রইচ উদ্দিন নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার ভুষণগাঁছা গ্রামের ইব্রাহিম সাকিদারের ছেলে।
আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান মামলা সুত্রে জানান, ২০১৪ সালের ৬ মে রাতে মা ও বাবার সাথে খাওয়া দাওয়া সেরে নিজ ঘরে ঘুমাতে যায় শিশুটি। সকালে ঘুম থেকে জেগে তার মা দেখতে পায় তার মেয়ে (শিশু) র ঘরের দরজা খোলা। পরে ঘরের ভিতরে গিয়ে দেখে তার শিশু কন্যার মুখের ওপর বালিশ চাপা দেওয়া ও শরীরের জামা কাপড় এলামেলো পড়ে রয়েছে। এ সময় তার চিৎকারে শিশুটির বাবা সহ প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে মেয়েকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে ঘটনাটি পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা আব্দুর রশীদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের অভিযুক্ত করে থানায় একটি ধর্ষন ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ তদন্ত করে সন্দেহভাজন হিসেবে কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা আনোয়ার হোসেন বাবু সহ বেশ কয়েকজনের নাম বলে। পরে আনোয়র হোসেন বাবুকে আটকের পর তার জবানবন্দিতে পাওয়া তথ্যমতে রইচ উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয় এবং আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। দীর্ঘ ১০ বছর মামলার স্বাক্ষ্য প্রমান গ্রহন শেষে আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন বাবু ও রইচ উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন। একই সাথে এই মামলায় কোন ভাবে জড়িত না থাকায় ৫ জনকে বেখসুর খালাস প্রদান করেন আদালতের বিচারক। খালাস প্রাপ্তরা হল , সোহাগ হোসেন, রাকিব হোসেন, আলামিন, জিয়ারুল ইসলাম জিয়া ও জামাল হোসেন জামাল।