নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর ইউনিয়নের ভূমি কার্যালয়ের পাশের সরকারী খালের পানি নিষ্কাশনের মুখ বন্ধ করে মাছ চাষ করছে এক প্রভাবশালী।এতে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় এক গ্রামের শতাধিক পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়ে।কয়েক বছর ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী আজিজুল ইসলাম নামের এক ব্যাক্তি সরকারী খালে মাছ চাষ করছে।অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী অজিজুল কে মাছ চাষ ও খালটি রক্ষণাবেক্ষনের জন্য দায়িত্ব দিয়েছে বিগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নির্দেশে মাধনগর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের তহশীলদার।খালের মুখ বন্ধ করে মাছ চাষ করায় পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় সৃষ্টি হয় জলাবন্ধতা।আর এতে প্রতিবছর বর্ষায় বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে প্লাবিত হওয়ায় গ্রামবাসী বাড়ি ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রায় নিতে বাধ্য হয়।শনিবার জলাবদ্ধতা স্থায়ী নিরসন ও খালের বাঁধের মুখ উন্মুক্ত করার দাবীতে শত শত গ্রামবাসী মানববন্ধন করেছে।
জানা যায়,উপজেলার মাধনগর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে দুই একরের একটি সরকারী খাল।খালের উত্তর পাশে দখল করে খালের মুখ বন্ধ করে ব্যবসী প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা গড়ে উঠেছে।ফলে এদিক দিয়ে পানি প্রবাহ অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। আর এ সরকারী খালের পূর্ব পাশে নলডাঙ্গা- মাধনগর সড়কের নিচের পানি নিস্কাশনের পথে বাঁধ দিয়ে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ করছে স্থানীয় প্রভাবশালী আজিজুল ইসলাম।ফলে প্রতিবছর অতি বৃষ্টির পানি বর্ষা মৌসুমে পশ্চিম মাধনগর গ্রাম প্লাবিত হয়ে স্থায়ী জলাবদ্ধতায় চরম দুভোর্গে পড়ে কয়েক শতাধিক পরিবার।পানি ঢুকে পড়ায় অনেকে বর্ষার সময় বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়।জলাবন্ধতায় ধসে যাচ্ছে বসতভিটা ও চলাচলের একমাত্র সড়ক।দুই পাড়ের খালের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে মাছ চাষ করায় ক্ষতির মুখে পড়েছে গ্রামবাসী। এর প্রতিকার ও দখল মুক্ত করে খালের দুই পাড়ের বাঁধ অপসারণের দাবীতে শত শত গ্রামবাসী মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধন শেষে পশ্চিম মাধনগর গ্রামের ভুক্তভোগি দুলাল সরদার অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ৭-৮ বিঘা এলাকা জুড়ে খালটির পানি প্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ করার অনুমতি দিয়েছে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মাধনগর ভুমি অফিস।এ গ্রামের আরেক বাসিন্দা মানিক বলেন,খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ করায় অতি বর্ষণে বর্ষার সময় বৃষ্টির জমা পানি বাড়ি ঘরে ঢুকে পরে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।এতে পরিবার নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হয়।মাফিয়া বেগম বলেন,খালের দুই পাড় ধসে আমাদের গাছপালা উপড়ে পরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।৭০ বছর বয়সী সোনাভান বলেন,এবার বর্ষার সময় আমার বাড়ির নিচে পানি জমে থাকায় আমার মাটির একটি ঘর ধসে পড়ে গেছে।
অভিযুক্ত মাছ চাষী আজিজুল ইসলাম বলেন,মাধনগর ভূমি কার্যালয়ের তহশীলদার খালটি রক্ষাবেক্ষণের জন্য কেয়ারটেকার হিসেবে আমাকে নিয়োগ দিয়েছে।আমি এই খালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করি।
মাধনগর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এম এ তাহের বলেন, জলমহাল নীতিমালায় খালটি ভোগ দখল করবে মাধনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিস।এ বিষয়ে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্যারের নির্দেশে খালটি রক্ষণাবেক্ষন ও মাছ চাষ করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম কে নিয়োগ দেওয়া হয়।অনেক আগে থেকে এভাবে চলে আসছে।তবে চাষকৃত মাছ বিক্রির টাকা কোথায় যায় প্রশ্নে তিনি বলেন ভূমি অফিসের মাটিকাটা ও রক্ষাণাবেক্ষণের কাজে টাকা গুলো ব্যয় হয়।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুখময় সরকার বলেন,মাধনগর ভূমি কার্যালয়ের পাশের জলমহাল টি জেলা প্রশাসক স্যারের অধিনে তাই এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক স্যার ভালো বলতে পারবে।
নাটোর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ মুঠোফোনে বলেন,বিষয়টি খোঁজ নিয়ে কোন অনিয়ম হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।আমি নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে ব্যবস্থ্য গ্রহনের জন্য বলে দিচ্ছি।