নাটোরের নলডাঙ্গায় কেছাতুল্লাহ সরদার নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।মঙ্গলাবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ভট্রপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে এ বৃদ্ধ কেছাতুল্লাহ মারা যায়।তবে এ মৃত্যু হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে তা নিয়ে এলাকায় চলছে নানা গুজন।অভিযোগ উঠেছে ভিক্ষাবৃত্তি না ছাড়ায় তাঁর সৎ ছেলে ও নাতি হত্যা করেছে।পুলিশ বলেছে ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়ার জন্য পরিবার থেকে নিষেধ করে কিন্ত মারধর করার কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি।নিহত কেছাতুল্লাহ সরদার (৭৮) উপজেলার ভট্রপাড়া গ্রামের মৃত কিয়ামত উল্লার ছেলে।
এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়,উপজেলার ভট্রপাড়া গ্রামের কেছাতুল্লাহ আগে ভিক্ষা করে সংসার চালাতো।অনেক আগে এ ভিক্ষা বৃত্তি ছেড়ে দেয়।তার নিজের কোন ছেলে নাই।কেছাতুল্লাহর স্ত্রীর আগের পক্ষের ছেলে জাহিদুল ইসলাম।এখন তাঁর ছেলে আর্থিকভাবে সচ্ছল হলেও তার বাবা কেছাতুল্লাহ কে হাত খরচের জন্য কোন টাকা দিতেন না।বাজারে কেছাতুল্লাহ কিছু দোকানে পন্য কিনে টাকা বকেয়া হয়।এই দোকানের বকেয়া টাকা পরিশোধের জন্য সোমবার বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে গোপনে ভিক্ষা করতে পাশে গ্রামের এক বাড়িতে গেলে তার নাতী ইমরান হোসেন দেখতে পায়।পরেদিন মঙ্গলবার দুপুরে নাতী ইমরান ও ছেলে জাহিদুল তাঁরা বাবাকে ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করেননি বলে অস্বীকার করেন।ভিক্ষাবৃত্তি নিয়ে মিথ্যা কথা বলায় নাতী ইমরান ক্ষিপ্ত হয়ে দাদা কেছাতুল্লাহ কে গালিগালাজ করে মুখের দাড়ি ধরে টানাটানি করে।বেলা একটার দিকে এ নিয়ে ছেলে জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করা হয়। পরে রাত আটটার দিকে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। গ্রামবাসীর কাছে ঘটনার কথা শুনে পুলিশ বৃদ্ধের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়। বুধবার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।নিহত কেছাতুল্লার ছেলে জাহিদুল ইসলাম ও নাতী ইমরান বলেন,আমরা ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়ার অনুরোধ করি কিন্তু মারধর করেনি।আগে থেকেই তার শ্বাসকষ্ট সমস্যা ছিল।অসুস্থ্য হলে আমরা ডাক্তার ডেকে চিকিৎসা করাই।স্ত্রী ছেলে ও নাতীসহ পরিবারের দাবী তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল হান্নান জানান,ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়ার জন্য কেছাতুল্লাহ সরদারের সঙ্গে তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রায়ই ঝগড়া হতো। মারপিটের ঘটনাও ঘটত। মঙ্গলবার দুপুরেও ছেলে ও নাতিদের সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।এ ব্যাপারে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।হত্যার অভিযোগ ওঠায় লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।