নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের গুরুদাসপুর রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের ছাত্রীদের সাথে অশোভন আচরণের অভিযোগ উঠেছে কলেজটির চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারি শাহাদত হোসেনের বিরুদ্ধে। অশোভন আচরণের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পরও কলেজ কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ছাত্রীরা। সর্বশেষ আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে পিয়ন শাহাদত হোসেন কলেজে প্রবেশ করলে ছাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ছাত্রীদের রোষানলে পড়ে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ফেলে রেখে দৌড়ে পালিয়ে যান পিয়ন শাহাদত হোসেন। এ সময় পিয়নের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি তালাবদ্ধ করে রাখে ক্ষুব্ধ ছাত্রীরা। ঘটনাটি অধ্যাক্ষের নজরে আসলে অধ্যক্ষের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
বেশ কয়েকজন ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, পিয়ন শাহাদত হোসেন কলেজে দায়িত্ব পালনের পাশপাশি নৈশপ্রহরি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনের সময় কলেজের আবাসিক এক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে অন্য ছাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে কলেজ থেকে পিয়ন শাহাদত হোসেনের অপসারণ দাবি করে অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি আমলে নিয়ে কলেজ শিক্ষক মায়ারানী চক্রবর্তীকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, পিয়ন শাহাদত একজন আবাসিক ছাত্রীর সাথে বিশেষ সম্পর্কে জড়ানোর পরও অন্য ছাত্রীদের দিকে ইংগিতপুর্ন আচরণ করেন। এত অভিযোগের পর অধ্যক্ষ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ছাত্রীদের গণস্বাক্ষর নিয়ে পিয়ন শাহাদতের অপসারণ দাবি করে তারা। গণস্বাক্ষরসহ একটি অভিযোগের কপি অধ্যক্ষ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর দিয়েছে বলে জানায় তারা।
তদন্ত কমিটির প্রধান মায়ারানী চক্রবর্তী বলেন, ‘তদন্তে পিয়নের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি প্রমানিত হয়। তাছাড়া ছাত্রীর ছাথে গড়ে ওঠা সম্পর্কটি নিয়ে তাঁর স্ত্রীও কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। স্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই পিয়নকে দুই দফা কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হলেও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি ঐ পিয়ন। একারনে তাকে ২২ দিনে বাধ্যতামূলক ছুটি দিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। একজন পিয়নের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সাথে অশোভন আচরণের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলেও অধ্যক্ষ ব্যবস্থা গ্রহন না করায় কলেজের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তবে কেন কী কারনে অধ্যক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না সেটা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে শিক্ষক ও ছাত্রীদের মাঝে।
এব্যাপারে অধ্যক্ষ মাহাতাব উদ্দিন বলেন, ‘নানা ব্যস্ততার কারণে অভিযোগটি আমলে নিতে বিলম্বিত হচ্ছে। তবে পরিচালনা কমিটির সভা ডেকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে।
ছাত্রীর সাথে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তোলা ও অন্য ছাত্রীদের সাথে ইংগিতপুর্ন আচরণের অভিযোগ অস্বীকার করে পিয়ন শাহাদত হোসেন বলেন, কলেজের কতিপয় শিক্ষক ব্যক্তিগত রেশারেশির জের ধরে তার বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক ও উদ্দেশ্যপূর্ণ এমন অভিযোগ আনা হচ্ছে। ছাত্রীদের তাড়া খেয়ে পারানোর বিষয়ে তিনি জানান, ছাত্রীদের হৈ চৈ দেখে তিনি মোটর সাইকেল রেখেই কলেজ থেকে চলে এসেছেন।
কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় জানান,কলেজের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে জানানো হয়নি। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।