নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ঠেঙ্গামারা উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে‘ সততা স্টোর’ নামে একটি খাতা,কলম সহ শিক্ষা সামগ্রীর দোকানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। দোকানটিতে কোন দোকানী থাকবেনা। নজরদারির জন্য কোন সিসি ক্যামেরাও বসানো নাই। শুধু দেয়ালে সাঁটানো একটি তালিকায় পন্যের দাম লেখা রয়েছে। সেই দাম অনুযায়ী খাতা-কলম বা অন্য কোনো শিক্ষা সামগ্রী নিয়ে নির্ধারিত বাক্সে রাখতে হবে টাকা। এভাবে কোনো দর দাম ছাড়াই শিক্ষার্থীরা কেনাকাটা করতে পারবেন ‘সততা স্টোর’ থেকে। এই দোকান থেকে শিক্ষার্থীরা যেমন সহজে নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারবে। তেমনি রাখতে পারবে সততার স্বাক্ষর। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল প্রধান অতিথি থেকে ওই ‘সততা স্টোরের’ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ নিয়ে দুদকের পৃষ্ঠ পোষকতায় উপজেলায় চারটি বিদ্যালয়ে এ সততা স্টোর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এর ফলে দোকানী ছাড়াই এসব দোকানে পণ্য সামগ্রী ক্রয়ের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সততা চর্চার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অনুষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রহমত সরকারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন উপজেলা দুর্ণীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারন সম্পাদক মাহাতাব উদ্দিন, প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমান, ম্যানেজিং কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুর রশীদ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, মুলত শিক্ষার্থীদের মাঝে সততার চর্চার উদ্দেশ্যেই দোকানটি করা হয়েছে। এটিকে সততার প্র্যাকটিক্যাল ক্লাশও বলা যেতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা মেনে এখান থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় যেকোনো শিক্ষা সামগ্রী কিনতে পারবে। দোকানের চারপাশের তাকে সাজানো আছে কলম, পেনসিল, খাতা, রাবারসহ বিভিন্ন রকমের শিক্ষা সামগ্রী। দোকানের একটি পণ্য অতিরিক্ত নিলে বা টাকা না দিলে দেখার কেউ নেই। তবু সবাই সততার পরীক্ষায় পাস করতে পারে কিনাতাই দেখার জন্য এই দোকান। প্রতিদিন স্কুল চলাকালীন সময় পর্যন্ত ওইদোকানটি খোলা থাকবে। আর কেবলমাত্র স্কুলের শিক্ষার্থী-শিক্ষকরাই এই দোকান থেকে পন্য ক্রয় করতে পারবে। দিন শেষে হিসেব নিকেশ করা হবে। এছাড়াও সকল শিক্ষার্থীদের ক্রয় করার পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষকদের সহযোগীতা নিতে পারবে। শিক্ষার্থীরা জানায়, স্কুলের সততা পরীক্ষা দেওয়ার এই ব্যবস্থায় তারা উজ্জীবিত হচ্ছে। সুযোগ থাকার পরও তারা কেন আরেকটি জিনিস নিবেনা এমন প্রশ্নের জবাবে তারা জানায়, ‘স্যাররা আমাদের বিশ্বাস করেনতাই। এতে আমাদের সততার পরীক্ষাও হবে। জীবনে এই প্রথমবারের মত সততা
চর্চার সুযোগ পেয়ে সবাই তা কাজে লাগাতে চাই’ । এই চর্চা সবশিক্ষার্থীদের ওপর ভাল প্রভাব ফেলবে বলে তারা মনে করে।স্কুলের শিক্ষক আব্দুল আজিজ বললেন, সততা স্টোরের মাধ্যমে দূর্ণীতিরপ্রতি ঘৃণা আর সততার প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি করবে নতুন প্রজন্মের মাঝে।