নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের সিংড়ায় এক অটো রিক্সা চালক তার নষ্ট রিক্সা নিয়ে যেতে না চাইলে রিক্সা চালক হারুন আলীকে পিটিয়েছে পুলিশ সদস্য এএসআই সেলিম রেজা। ২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে সিংড়া উপজেলা পরিষদ রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য সিংড়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সেলিম রেজা।
ভুক্তভোগী অটোরিক্সা চালকের হারুন আলী সিংড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাইশা গ্রামের বাসিন্দা।
ভিডিওতে দেখা যায়, রিক্সা নিয়ে হারুন আলী দমদমা থেকে সিংড়া বাসষ্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় চালক উপজেলা পরিষদ রোড এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ সদস্য সেলিম রেজা রিক্সাটি থামায়। এরপর এএসআই, এক পুলিশ কনস্টেবলসহ তিনজন তার রিক্সায় উঠে পড়ে বাসষ্ট্যান্ডে নিয়ে যেতে বলেন। এ সময় চালক বলেন, স্যার মিটারের তার সংযোগ লুজ হয়ে গেছে, গাড়ি যাচ্ছে না। অনেক কষ্টে আমি হাত দিয়ে তার ধরে এ পর্যন্ত এসেছি। এরপর ভিডিওতে এএসআইকে বলতে শোনা যায়, আরে বেটা আমি তোরে বলছি তুই যা, একে বারে কান ফাটাই ফেলব যা যা। এ সময় অকথ্য ভাষায় চালককে গালিগালাজ করতে থাকেন। এক পর্যায় এএসআই ক্ষুদ্ধ হয়ে তার হাতে থাকা টস লাইট দিয়ে চালকের মাথায় মারধর করতে থাকেন। পরে আবারও দ্বিতীয় দফায় চালকে মারধর করতে দেখা গেছে। এ সময় চালকের কান্নায় আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তাদের ধমক ও গালি দিয়ে সরিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা। এরপর চালক ওই তিনজনকে রিক্সায় নিয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অটো রিক্সা চালক হারুন আলী বলেন, রাতে দমদমা এলাকায় তার রিক্সার মিটারের তার ছিঁড়ে যায়। এরপর এক হাত দিয়ে তার চেপে ধরে অনেক কষ্টে তিনি বাসষ্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন। এ সময় কোর্ট মাঠ পার হলে দুই পুলিশসহ তিনজন তার রিক্সা থামায়। এ সময় তারা বলেন, তোকে সিগন্যাল দিলাম, তুই দাঁড়ালি না কেন। তখন আমি বললাম, আমি বুঝতে পারিনি স্যার। আমার গাড়ির মিটারের একটি তার ছিঁড়ে গেছে তাই মেরামত করতে সিংড়া বাসষ্ট্যান্ডে যাচ্ছিলাম। এ সময় তিনজন রিক্সায় উঠে থানায় যেতে বলে আমাকে ওই পুলিশ মারধর করতে থাকেন। পরে আমার নষ্ট গাড়িতে তিনজন উঠে জোর করে আমাকে দিয়ে টেনে সিংড়া বাস ষ্ট্যান্ডে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এএসআই সেলিম রেজার কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমি কেন রিক্সা চালককে মারধর করব? আমি এমন কোন ঘটনা জানিনা।
এ বিষয়ে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, এমন কোন ঘটনা তিনি কারো কাছ থেকে শুনেনি। সাংবাদিকদের কাছে থেকেই তিনি প্রথম শুনলেন। বিষয়টি খোঁজ করে দেখবেন।