স্টাফ রিপোর্টারঃ
নাটোরের সিংড়ায় চলনবিল পয়েন্টে জামে মসজিদের নামে পর্যটকদের নৌকা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। শুধু পর্যটকদের নৌকাই নয়, যেকোনো নৌকা ওইখানে ভিড়লেই দিতে হচ্ছে চাঁদা। চাঁদা দিতে আপত্তি করলে বা কারণ জানতে চাইলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ জরিমানাও আদায় করা হয় তাদের। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন হুমকি ধামকি। এলাকার কতিপয় যুবক সঙ্গবদ্ধ হয়ে নৌকা প্রতি ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে। তাদের দাপটে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। এদের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছেন। দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী এলাকাবাসী সহ পর্যটকদের।
পর্যটক ফরিদ দেওয়ান বলেন, তারা নৌকা নিয়ে ঘুড়তে ঘুড়তে এই মাজারে যান। এসময় সেখানে নৌকা রাখতেই কোন কিছু না বলেই ১০০ টাকা দাবী করেন। তবে কেন টাকা নেওয়া হবে তা জানাতে ইচ্ছুক না তারা। এ সময় তাদের সাথে বাকবিতন্ডার পর সেখান থেকে ফিরে যেতে চাইলেও তাদের টাকা দিতে হবে দাবী করেন। এক পর্যায়ে গালিগালাজ সহ্য না করে নিজেদের সম্মানের কথা চিন্তা করে একশো টাকা দিয়ে সেখান থেকে ফিরে আসেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার অনেকেই বলেন তারা এলাকার চিহ্নিত সবাই। এরা সরকারী দলের নেতাদের সাথে উঠাবসা করেন। এদের সাথে কোন তর্ক করলে হয়রানী হতে হয়। এখানকার টাকা অনেক উপরের নেতাও পায়। প্রতিদিন এভাবে বড় অংকের টাকা উঠে। এরা সবাই বেপরোয়া কোন কিছু বলার নাই। প্রশাসন সবকিছুই জানে কিন্তু তারাও কিছুই বলেনা অদৃশ্য কারনে। দ্রুত এই চাঁদাবাজী বন্ধ করা উচিত।
সম্প্রতি নাটোরের গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলার সাংবাদিকরা নৌকা নিয়ে চলনবিল ভ্রমণকালে চলনবিল পয়েন্টে গেলে তাদের কাছেও চাঁদা দাবি করা হয়। সাংবাদিকের নৌকা পরিচয় দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন এবং গালাগালি করেন। পরে “পেট্রোবাংলা পয়েন্ট জামে মসজিদ” এর একটি রশিদে ১০০ টাকা চাঁদা আদায় করেন তারা।
এ বিষয়ে সিংড়ার স্থানীয় গনমাধ্যম কর্মিরা বলেন, তারা যা করছে এগুলো কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। শুধু নিউজ করে এদের থামানো যাবেনা। এদের থামানোর জন্য প্রতিমন্ত্রী যদি হস্তক্ষেপ করেন তবেই সম্ভব।
জানা যায়, চাঁদা আদায় এবং দুর্ব্যবহারের কারণে অনেক পর্যটকের নৌকা সিংড়া চলনবিল পয়েন্টে যাচ্ছে না। এর প্রতিকার হওয়া উচিত বলে অনেক ভুক্তভোগী মনে করেন। তাছাড়া সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও চলনবিল পয়েন্টে পর্যটকদের ভিড় কমে গেছে। সেইসাথে তিশিখালি, বিলসা ও কুন্দইল পয়েন্টে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
এ বিষয়ে নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, মসজিদের নামে এ ধরণের চাঁদাবাজির কোনো সুযোগ নেই। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।