নাটোরে কোন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী নেই তবে নিজেদের বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ১৫ জন প্রবাসী। সোমবার রাতে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ জেলা কমিটির সভায় এ তথ্য জানানো হয়। জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজের জানান, নাটোরে ফেরা ১৫ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ, স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, পুলিশ এবং ধর্মীয় নেতাদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে এবং করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তবে আতংকিত না হওয়ার এবং গুজবে কান না দেওয়ার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান তিনি।
এছাড়াও জনসমাগম পরিস্থিতি এড়িয়ে চলার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ জেলা কমিটির সদস্য সচিব ও নাটোরের সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী মিজানুর রহমান জানান, নাটোর সদর হাসপাতালে পাঁচ শয্যার এবং একডালাতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহিলা আশ্রায়ন ও পূণর্বাসন কেন্দ্রে ১০০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নলডাঙ্গা ও বড়াইগ্রাম উপজেলায় আরো দুইটি আইসোলেশন সেন্টার তৈরী করা হচ্ছে। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলার সক্ষমতা তাদের রয়েছে। হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ১৫ ব্যক্তিকে দুই সপ্তাহ অন্তরীণ বিধি প্রতিপালনে স্বাস্থ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টদের উদ্বুদ্ধ করছে বলে এই কর্মকর্তা উল্লেখ করেন। সিভিল সার্জন অফিস থেকে নাটোরে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ১৫ ব্যক্তিরা কে কত তারিখে এবং কোন দেশ থেকে এসেছেন তার তথ্য ঃÑ নাটোর সদর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে লিটন হোসেন তিনি গত ৬ মার্চ দক্ষিন কোরিয়া থেকে বাংলাদেশে আসেন। দিয়ারপাড়ার প্রহল্লাদ মন্ডলের ছেলে শংকর কুমার মন্ডল একই দিন মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে আসেন। একই দিন ধরাইলের দিয়ারপাড়া গ্রামের ওহিদুল্লাহর ছেলে চান মিয়া তিনিও মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে আসেন। এরপর গত ৮ মার্চ মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন ধরাইলের দিয়ারপাড়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে আব্দুল আওয়াল। এছাড়াও একই গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে এরশাদ আলী তিনিও গত ১০ মার্চ মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে আসেন। ওমান থেকে গত ৫ মার্চ দেশে আসেন সদর উপজেলার রায় হালসা গ্রামের রাহাব হোসেনের ছেলে ফরহাদ রেজা। একই গ্রামের আলম হোসেনের ছেলে মারুফ হোসেন তিনিও ৫ মার্চ তিনিও ওমান থেকে দেশে আসেন। মাটিকোপা গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে রাফিকুল ইসলাম মালদ্বীপ থেকে দেশে আসেন গত মার্চ। নলডাঙ্গা উপজেলার রামশার কাজিপুর কামারপাড়া মহল্লার মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে আজিজ তিনি গত ১২ মার্চ কুয়েত থেকে বাংলাদেশে আসেন। নাটোর শহরের পৌর এলাকার কানাইখালী মহল্লার আহম্মেদ হোসেন চাম্পার ছেলে পাপন তিনি আমেরিকা থেকে গত ১০ মার্চ দেশে আসেন।
ভট্টপাড়া (ঘোষ পাড়া) মহল্লার কায়েম ফকিরের ছেলে হাফিজুল ইসলাম গত ১২ মার্চ সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে আসেন। বড়াইগ্রাম উপজেলার বাহিমালী গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মেহেদী হাসান রনি গত ১৫ মার্চ ইতালী থেকে বাংলাদেশে আসেন। একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে আলামিন ওরফে দুলাল তিনিও ইতালী থেকে গত ১৬ মার্চ বাংলাদেশে আসেন। এছাড়া সিংড়ার শেরকোল গ্রামের ফিরোজ হোসেন গত ৯ মার্চ ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। সভায় পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী মিজানুর রহমান, নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ আনছারুল হক, নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলম,নাটোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান, নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।