রাসায়নিক পদার্থের অপব্যবহার রোধ করে পরিপক্ক আম প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নাটোরে আগামী ২০ মে থেকে আম ও ২১ মে থেকে লিচু গাছ থেকে সংগ্রহ শুরু হবে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে কৃষি বিভাগ ও আম ব্যবসায়ীদের সাথে এক বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত দেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আশরাফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত, আম চাষী সেলিম রেজা। পরবর্ত্তীতে ২৫ মে থেকে স্থানীয় দেশীয় জাতের গুটি ও বৈশাখী আম, ২৮ মে থেকে রাণী পছন্দ ও ক্ষীরসাপাত, ১ জুন থেকে লক্ষণভোগ ও মহান্দা, ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ৭ জুন থেকে কাঁচামিঠা, ১৫ জুন থেকে দুধসর, কার্ডিমন ও মোহনভোগ জাতের আম, ১৬ জুন থেকে কৃষাণভোগ, ২০ জুন থেকে হাড়িভাঙ্গা আম, ৩০ জুন থেকে আম্রপালী, মল্লিকা ও ফজলী, ১৫ জুলাই থেকে বারি-৪, ২০ জুলাই থেকে আশ্বিনা জাতের আম এবং সর্বশেষ ১৫ আগষ্ট থেকে গৌড়মতি আম সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। অপরদিকে ২১ মে থেকে মুজাফফর জাতের লিচু এবং ১৫ জুন থেকে বোম্বাই জাতের লিচু সংগ্রহের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। এই সময়সূচীর আগে কোন জাতের আম ও লিচু গাছে পরিপক্ক হলে উপজেলা কৃষি বিভাগ ও প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে কৃষক বা ব্যবসায়ী গাছ থেকে আম সংগ্রহ করতে পারবেন।
জেলার সাতটি উপজেলা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সভার সাথে সংযুক্ত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ আম ও লিচু সংগ্রহে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার ব্যাপারে প্রশাসনিক প্রস্তুতির কথা জানান।
সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, দীর্ঘসময় সংরক্ষণ, কষের মাধ্যমে পচন রোধ ও পরবর্ত্তীতে গাছে কুশি বের হওয়ার সুবিধার জন্য বোটাসহ আম পাড়তে কৃষকবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এছাড়াও জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ক্ষতিকর স্প্রে করা থেকে বিরত থাকা এবং ব্যাগিং পদ্ধতি অনুসরণে কৃষকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেশী করে শাক-সব্জি ও ফল খাওয়ার কথাও বলেন তিনি। বিশেষ করে দেশীয় সুস্বাদু ফল আম ও লিচু এক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে জানান।
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার জানান , চলতি বছরে জেলায় পাঁচ হাজার ৫২০ হেক্টর জমি থেকে ৭৭ হাজার ৩০৫ টন আম এবং ৯৫৩ হেক্টর জমি থেকে আট হাজার ৩০৭ টন লিচু উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। লিচুর বাজার মুল্য প্রায় ১৫০ কোটি টাকা হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।