নিজস্ব প্রতিবেদক
পুলিশের ভুল প্রতিবেদনের দায়ে দীর্ঘ ১৮ বছর পর নির্দোষ বাবলু শেখকে মামলা থেকে রেহাই ও মামলার দুই তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। সেই সাথে মামলার মূল আসামী শ্রী বাবু, পিতা দেবদাস, আাঁচলকোট , সিংড়া থানার বিরুদ্ধে পুনরায় সাজা পরোয়ানা দাখিল ও গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক এই আদেশ দেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০১ সালের ১৫ এপ্রিল নাটোর সদর উপজেলার গাঙ্গইল গ্রামে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় কাজী আবদুল মালেক বাদী হয়ে শ্রী বাবুসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় ৩ নম্বর আসামী ছিলেন শ্রী বাবু। তৎকালীন সদর থানার উপ-পরিদর্শক মমিনুল ইসলাম এবং হেলেনা পারভীন শ্রী বাবুকে অভিযুক্ত করে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। কিন্তু ২০০২ সালের ৭ নভেম্বর শ্রী বাবুর পরিবর্তে সিংড়া উপজেলার আঁচলকোট গ্রামের বাবলু শেখকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। মামলাটি বিচারের জন্য আদালতে এলে যুক্তিতর্ক শেষে ২০১৬ সালের ২৩ জুন মুখ্য বিচারিক হাকিম মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী আসামি বাবুর বিরুদ্ধে দুই বছর সশ্রম কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দেন। ওই দিন কাঠগড়া থেকে বাবলু শেখকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে তিনি ১৬/০৮/১৬ তারিখে আপিলের মাধ্যমে জামিনে বের হন।এ বিষয়ে নাটোর দায়রা আদালতে আপীল করা হলে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাইফুর রহমান সিদ্দিকের আদালতে মামলাটি বিচারের জন্য প্রেরিত হয়। মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ শেষে বিচারক আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে বাবলু শেখকে মামলা থেকে মুক্তির নির্দেশ দেন। একই সাথে মামলার তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোমিনুল ইসলামও এসআই হেলেনা পরভীনের সঠিকভাবে তদন্ত না করার অপরাধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের আইজিপিকে নির্দেম প্রদাণ করেন। পর্যবেক্ষণে মামলার ফরোয়ার্ডিং কর্মকর্তা তৎকালীন নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)ও বিরুদ্ধে দায়ত্ব অবহেলা প্রমানতি হয়। মামলায় আরো বলা হয় বাবলু শেখের সাজা ভোগের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী সঠিকবাবে দায়িত্ব পালন করেন নি। এবিষয়ে সঠিক দায়িত্ব পালনের জন্য অত্র রায়ের কপি বার কাউন্সিলের সভাপতি সেক্রেটারী বরাবর প্রেরনেল নির্দেশ দেয়া হয়। বাবলু শেখের বর্তমান আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামীম উদ্দীন জানান, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাইফুর রহমান সিদ্দিকী মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে যে আদেশ দেন তাতে অবশেষে বাবলু শেখের ভোগান্তির অবসান ঘটলো। ভুক্তভোগী বাবলু শেখ দীর্ঘদিন পর ভোগান্তির অবসান হওয়ায় আদালত ও আইনজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।