নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরে সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক নান্নু শেখকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করেছে যুবলীগ নেতা ও সমর্থকরা। মঙ্গলবার শহরের ভবানীগঞ্জ মোড় এলাকায় তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পুলিশের দাবী এলাকায় আধিপত্ত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ও পুর্ব বিরোধের জের ধরে এই হামলার ঘটনা ঘটে । ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শিরা জানায়, মঙ্গলবার নান্নু শেখ শহরের ভবানীগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনের সামনের একটি তরমুজের দোকানের সামনে বসে ছিলেন। এ সময় ৩ নং ওয়ার্ড যযুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন আলী তার ভাই স্বপ্ন সহ একদল সন্ত্রাসী সেখানে গিয়ে নান্নুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার সময় তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে আওয়ামীলীগ নেতা নান্নু শেখের ওপর এই হামলার জন্য প্রতিপক্ষ ওয়ার্ড যুবলীগ সাধারন সম্পাদক মিঠুন আলী ও তার সমর্থকদের দায়ী করেছেন জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান। হামলাকারীরা স্থানীয় এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের অনুসারি এবং আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী বিএনপি -জামায়াত থেকে আসা হাইব্রিড বলে অভিযোগ করেন শরিফুল ইসলাম রমজান। সম্প্রতি এই হাইব্রীডদের হামলার শিকার হয়েছেন রিওন ,আশাসহ আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন নেতা কর্মী। তিনি ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল দেশের বাহিরে থাকায় (কানাডায় স্ত্রী সন্তানদের কাছে) তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে সংসদ সদস্য শিমুলের ব্যক্তিগত সহকারী জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক উপ দপ্তর দম্পাদক প্রভাষক আকরামুল ইসলাম বলেন, মিঠুন আলী ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারন সম্পাদক। তিনি বিএনপি বা জামায়াত থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী নন। এছাড়া তিনি শ্রমিক সংগঠনের সাথেও জড়িত। তাকে অনুপ্রবেশকারী বলে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। তবে ঘটনার সাথে যারাই জড়িত প্রশাসন তাদের সনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। নিরীহ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন। এ ব্যাপারে যুবলীগ নেতা মিঠুন আলী তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবী করেছেন।
নাটোর পৌর যুবলীগ আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সায়েম হোসেন উজ্জল বলেন,আওয়ামীলীগ নেতা নান্নু শেখের ওপর হামলার ঘটনার তিব্র নিন্দা জানান তিনি। তদন্ত করে ঘটনার সাথে যদি যুবলীগের কেউ জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রমান মিললে দল থেকে বহিস্কার করা হবে।
এদিকে আহত নান্নু শেখকে নাটোর সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এই হামলার ঘটনার পর নান্নু শেখের সমর্থকরা ভবানীগঞ্জ এলাকায় মিঠুনের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে চেয়ার ভাংচুর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পরপরই নান্নুর সমর্থকরা মিঠুন গ্রুপের খোঁজে এলাকায় তল্লাশী শুরু করলে সাধারন মানুষের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি হয়। পুলিশে তৎপরাতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাছিম আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে আটকের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ করেনি কেউ।