ডেস্ক নিউজ
কর্ণফুলীর দু’পাড়ের মেলবন্ধন বঙ্গবন্ধু টানেল
১৬ কি.মি দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
দৃষ্টিনন্দন সিটি আউটার রিং রোড
মেরিন ড্রাইভ যাবে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে লালদীঘি মাঠের বিশাল জনসমুদ্রে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব আমি নিজ হাতে নিলাম।’ ভোটে জয়লাভ করে সরকার গঠনের পর থেকে গৃহীত হতে থাকে একের পর এক উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা, যার বেশ কিছু এরইমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। চলমান রয়েছে কর্ণফুলীর তলদেশে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল, সিটি আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্পসহ ছোট বড় অনেক উন্নয়নের কাজ। ২০২২ সালের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে প্রায় সবগুলো। এতে করে নান্দনিক চেহারায় উদ্ভাসিত হবে চট্টগ্রাম।
শুরুটা হয়েছিল বহদ্দারহাটে এম এ মান্নান ফ্লাইওভার নির্মাণের মধ্য দিয়ে। এরপর মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার। এটি চালু হয়ে যাওয়ার পর ব্যস্ততম সড়কের এ অংশে যানজট আর নেই বললেই চলে। কারণ, ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি অটোরিক্সাসহ বেশিরভাগ যানবাহন চলে যাচ্ছে ওপর দিয়ে। পতেঙ্গা থেকে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এসে মিলবে লালখান বাজার এসে। ফলে মহানগরীর প্রধান সড়ক হবে অনেকটাই যানজটমুক্ত। আউটার রিং রোডের কাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও যানবাহন চলাচল শুরু হয়ে গেছে। কর্ণফুলী টানেল হয়ে গেলে সেই রিং রোড সুড়ঙ্গপথে বেরিয়ে যাবে দক্ষিণ পাড়ের আনোয়ারায়, যেখানে রয়েছে পারকি সমুদ্র সৈকত। পুরো এলাকাটি হতে যাচ্ছে পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে বেশিরভাগ মেগাপ্রকল্প। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২২ সালের মধ্যেই অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে। তখন চট্টগ্রাম মহানগরী এক দৃষ্টিনন্দন রূপ লাভ করবে। মাঝে দেড় বছর করোনা মহামারীর কারণে কাজে ধীরগতি হলেও এখন পুরোদমে চলছে কর্মযজ্ঞ। প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, সবকিছু হচ্ছে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের পর্যটনকে বিশেষভাবে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।
দুপাড়ের মেলবন্ধন বঙ্গবন্ধু টানেল ॥ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ গিয়ে যে সুড়ঙ্গপথ তৈরি হচ্ছে তা শুধু সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করবে না, বন্দরের জন্যও সহায়ক হবে। কেননা, সেখানে পিলার সেতু হলে পলি জমে নদীর নাব্য ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা ছিল। প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনায় বাস্তবায়নাধীন বঙ্গবন্ধু টানেল সৌন্দর্যের পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের মেলবন্ধন। সিটি আউটার রিং রোড প্রবেশ করবে এই টানেলে, যা বেরিয়ে আনোয়ারা হয়ে মিলিত হবে কক্সবাজার মহাসড়কের সঙ্গে। আবার এ রিং রোড উত্তর দিকে সম্প্রসারিত হয়ে চলে যাবে মীরসরাই, সীতাকুণ্ড ও ফেনীর সোনাগাজী এলাকায় বাস্তবায়নাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর পর্যন্ত।
বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ চৌধুরী জানান, প্রকল্প কাজের ৭২ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। টানেলে মোট দুটি টিউব। এরমধ্যে একটি দিয়ে যানবাহন যাবে এবং অপরটি দিয়ে ফিরবে। দুই টিউবের একটির কাজ আগেই শেষ হয়েছে। প্রতিটি টিউবের দৈর্ঘ্য ২ হাজার ৪৫০ মিটার। এখন চলছে দ্বিতীয় টিউব নির্মাণের কাজ, যার ২ হাজার ১৭০ মিটার বোরিং হয়ে গেছে। তিনি জানান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কাজে স্থবিরতা এসেছিল। তারপরও নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যে কাজের গতি বাড়ানো হয়েছে।
১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে কর্ণফুলী টানেলের কাজ শেষ হলে চট্টগ্রাম মহানগর রূপ নেবে চীনের সাংহাইয়ের মতো ওয়ান সিটি টু টাউনে। এ সড়ক দিয়ে যাত্রীবাহী, পণ্যবাহী সব ধরনের যানবাহন চলাচল করবে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারায়ও গড়ে উঠবে শিল্প কারখানা। সেখানে একটি চায়না ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠিত হবে, যেখানে বিনিয়োগ করবেন চীনা বিনিয়োগকারীরা। পারকি সমুদ্র সৈকত ঘিরে প্রায় একশ’ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এর আওতায় হবে হোটেল, রিসোর্ট ও সৈকতের সৌন্দর্যবর্ধন। পর্যটকরা আউটার রিং রোড অর্থাৎ পতেঙ্গা সি-বিচ থেকে টানেলের ভেতর দিয়ে চলে যেতে পারবে পারকিতে, যা মিনি কক্সবাজার হিসেবে খ্যাত হয়ে আছে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অগ্রগতি ॥ চট্টগ্রাম মহানগরীর যানজট নিরসনে আরেকটি মেগা প্রকল্প ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। লালখান বাজার থেকে ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ উড়ালপথ চলে যাবে পতেঙ্গায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত। এ কাজটি সমাপ্ত হলে শহরের মধ্যভাগ থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে আধাঘণ্টারও কম। এখন ট্রাফিক জ্যামে পড়ে দুই ঘণ্টা সময়ও লেগে যায়। এই প্রকল্পের কাজ ৫৮ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে চউক।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক চউক নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জনকণ্ঠকে জানান, দীর্ঘ এ উড়াল সড়কে মোট পিলার হবে ৩৭৯টি, যারমধ্যে আড়াইশ’ পিলার স্থাপনের কাজ এরমধ্যেই শেষ হয়েছে। পতেঙ্গা থেকে সল্টগোলা পর্যন্ত এবং বারিক বিল্ডিং থেকে চৌমুহনী পর্যন্ত কাজ এখন দৃশ্যমান। পতেঙ্গা অংশে স্ল্যাব বসানোর কাজও শুরু হয়ে গেছে। তিনি বলেন, সবচেয়ে সময়সাপেক্ষ কাজ হলো পিলার স্থাপন করা। এ কাজটি শেষ হয়ে গেলে স্ল্যাব ও সড়কের কাজ বেশ দ্রæতগতিতেই সম্পন্ন হবে। তিনি জানান, বারিক বিল্ডিং থেকে সল্টগোলা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কিছু আপত্তি ছিল নিরাপত্তা বিবেচনায়। এখন তা কেটে গেছে। ফলে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ক্ষেত্রে আর কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা নেই।
এদিকে, চট্টগ্রাম মহানগরীর মুরাদপুর থেকে শুরু হওয়া আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার নেমেছে লালখান বাজারে এসে। আর এখানেই এসে সংযুক্ত হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ফলে ১৬ কিলোমিটারের এ উড়াল সড়ক আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রায় ২২ কিলোমিটারে দাঁড়াবে। এটিই চট্টগ্রাম নগরীর প্রধান সড়ক। উপরে যদি উড়াল সড়ক হয়ে যায় তাহলে নিচের সড়কে আর যানজট থাকবে না।
চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড ॥ চট্টগ্রাম মহানগরীর ভেতরের যানজট নিরসনে সবচেয়ে বড় প্রকল্প সিটি আউটার রিং রোড। এরমধ্যেই পতেঙ্গা নেভাল একাডেমি থেকে সাগরিকা পর্যন্ত সাগর পাড় ঘেঁষে তৈরি হয়ে গেছে রিং রোড, যা যানবাহন চলাচলের জন্য খুলেও দেয়া হয়েছে। শহরের যানজট এড়িয়ে এ সড়ক ধরে এখন সর্বোচ্চ আধাঘণ্টার মধ্যে বিমানবন্দর যাওয়া সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া রিং রোডের পতেঙ্গা অংশ এখন পর্যটকদের প্রবল আকর্ষণের জায়গায় পরিণত হয়েছে।
আউটার রিং রোডের পতেঙ্গা থেকে হালিশহর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা এখন পর্যটন জোন। প্রতিদিন হাজারো মানুষের সমাগম ওই স্থানে। সেখান থেকে দেখা যায় সাগরের ঢেউ এবং সারি সারি জাহাজ। এছাড়া সৈকতে ঘোড়া, সাগরে স্পিডবোটে ঘুরে বেড়ানো। বিকেলের পতেঙ্গা মানে পর্যটকে ঠাসা। রাত অবধি কোলাহল। সেখানে স্থাপিত বøকগুলোতে বসে সাগরের মুক্ত হাওয়া উপভোগ। পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
চউক প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস জনকণ্ঠকে বলেন, ২৬৭৫ কোটি টাকার এ প্রকল্প কাজের ৯৫ ভাগই শেষ। এখন চলছে মহানগর থেকে রিং রোডে ওঠার জন্য দুটি ফিডার রোড নির্মাণের কাজ। এরমধ্যে একটি ফিডার রোড হবে সাগরিকা থেকে, অপর ফিডার রোডটি হবে পতেঙ্গা এলাকায়। এ রিং রোড উত্তর দিকে আরও দীর্ঘায়িত হবে। এছাড়া জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজও দ্রæত শেষ হওয়ার পথে।
এছাড়া নগরীর চাক্তাই থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত কর্ণফুলীর তীর ঘেঁষে নির্মিত হচ্ছে আরেকটি সড়ক, যা একইসঙ্গে নদীর তীররক্ষা সড়ক হিসেবে কাজ করবে। এ প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২ হাজার ৩শ’ কোটি টাকা। ইতোমধ্যেই প্রকল্পের ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে মোট ১২টি সুইচগেট থাকবে, যার ১০টির কাজ এখন চলছে। এটিও সেই সিটি আউটার রিং রোডের সঙ্গেই যুক্ত হবে। সব মিলিয়ে পুরো চট্টগ্রাম মহানগর ঘিরে সৌন্দর্যমÐিত আউটার রিং রোড, যা যানজট যেমন কমাবে তেমনিভাবে বন্দরনগরীকে একটি সুশৃঙ্খল শহর হিসেবে তুলে ধরবে।
দৃষ্টিনন্দন বায়েজিদ লিঙ্ক রোড ॥ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়িত আরেকটি কাজ বায়েজিদ লিঙ্ক রোড, যা ফৌজদারহাট থেকে শুরু হয়ে শেরশাহ কলোনি গিয়ে শেষ হয়েছে। দুপাশে পাহাড় এ সড়কের। সড়কটি এতই সুন্দর যে, হাজারো মানুষ তা দেখতে যায়। শুধু সৌন্দর্য্যরে জন্যও নয়, যানবাহন চলাচল শুরু হয়ে যাওয়ার পর চাপ কমেছে নগরীর সড়কগুলোর ওপর। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট দিয়ে এই সড়কে ঢুকে পড়ছে বায়েজিদ বোস্তামী, অক্সিজেন, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও কাপ্তাই অভিমুখী যানবাহনগুলো। প্রায় সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সড়ক বস্তুত সিটি আউটার রিং রোডেরই একটি অংশ। কেননা, ফৌজদারহাট এলাকা দিয়ে তা মিলেছে সাগরপারের রিং রোডের সঙ্গে।
মেরিন ড্রাইভ সম্প্রসারিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর পর্যন্ত ॥ সিটি আউটার রিং রোড শুধু মহানগর এলাকাতেই থেমে থাকছে না। বরং তা ধীরে ধীরে সীতাকুণ্ড হয়ে মীরসরাই পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হচ্ছে। চউকের পরিকল্পনা অনুযায়ী ফৌজদারহাট থেকে রিং রোড যাবে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত। সাগরিকা থেকে এ পর্যন্ত তার দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। চার লেনের এ সড়ক সকল ধরনের যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে নির্মিত হবে। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর পর্যন্ত এ সড়ক এগিয়ে নেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যায়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন অথরিটি (বেজা)। এভাবেই মীরসরাই থেকে আউটার রিং রোড হয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল পর্যন্ত দীর্ঘপথ রূপ নেবে আকর্ষণীয় এক মেরিন ড্রাইভে।
চউক সূত্রে জানা যায়, পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক মিশে যাবে উত্তরের মেরিন ড্রাইভের সঙ্গে। বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত নতুন এ সড়ক হয়ে গেলে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর পর্যন্ত বাকিটুকু এগিয়ে নেবে বেজা। প্রকল্পটির সমীক্ষা এখন একেবারেই শেষ পর্যায়ে।
চউকের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস জানান, অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এটিও হবে আরেকটি মেগা প্রকল্প। এ বছরের মধ্যেই প্রকল্পটি একনেকে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ চলছে। মীরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর থেকে বঙ্গবন্ধু টানেল হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত যে মেরিন ড্রাইভের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, এটি তারই অংশ। শিল্প নগরের কারখানাগুলো তাদের আমদানি রফতানির পণ্য এ সড়ক দিয়ে পরিবহন করতে পারবে। এতে করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর চাপ কমে আসবে।
বেজা সূত্র জানায়, বাঁশবাড়িয়া থেকে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়কটি প্রথমে দুই লেনের হবে। এরপর বেশ দ্রæতই তা চার লেনে উন্নীত করা হবে। এরইমধ্যে শিল্পনগর থেকে সীতাকুণ্ডের উত্তরপ্রান্ত পর্যন্ত সুপার ডাইক নির্মাণের কাজ অনেকটাই দৃশ্যমান, যা প্রস্তাবিত সড়কে সংযুক্ত হবে। সেখানে গড়ে উঠবে সমুদ্রবন্দর, যার সড়ক হিসেবে কাজ করবে এটি। সব মিলিয়ে দেশের ব্যবসা বাণিজ্য এবং অর্থনীতির ক্রম বিকাশমান অবস্থা বিবেচনায় চট্টগ্রামের উন্নয়নে অনেকগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন, যার বেশকিছু শেষ এবং বাকিগুলো চলমান।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়ন তো শুধু চট্টগ্রামের জন্য নয়। বরং দেশের অর্থনীতি যেভাবে বাড়ছে, তাকে সার্ভিস দিতে চট্টগ্রামকে সক্ষম করে গড়ে তুলতে হবে। সরকার বিষয়টি যৌক্তিকভাবে বিবেচনায় নিয়েছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়কটি হবে চার লেনের। এ সড়কের ফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে দেশের কানেক্টিভিটি। অব্যবহৃত অনেক পতিত জায়গা পরিণত হবে অর্থনীতির জন্য অনেক বড় এক সম্পদে। মেরিন ড্রাইভ হয়ে গেলে শুধু শিল্প কারখানা এবং আবাসনই নয়, সাগরপারে গড়ে উঠবে উন্নতমানের হসপিটাল এমনকি সেভেন স্টার হোটেলও। সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম এমনই চেহারায় প্রকাশিত হতে যাচ্ছে, যা আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। তবে আবারও বলছি, চট্টগ্রামের উন্নয়ন সারাদেশের জন্য। কারণ, বন্দরসহ নানা ধরনের সেবায় চট্টগ্রাম পুরো দেশের অর্থনীতির প্রাণ। এ সরকারের হাত ধরে দেশে শিল্পায়ন ও অর্থনীতি সম্প্রসারণের যে সূচনা হয়েছে তা দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলতে থাকবে, এমনই আমরা আশা করি।