ডেস্ক নিউজ
নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি খরস্রোতা চেল্লাখালী নদীর ওপর নির্মিত রাবার ড্রাম-কাম হাইড্রোলিক পাঁচ কিউসেক ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার পাম্প চালু হয়েছে। এতে অল্প খরচে সেচসুবিধা পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। স্বল্পখরচে সেচসুবিধার মাধ্যমে কৃষকরা ফসল ফলাতে আশার আলো দেখছেন। হাসির ঝিলিক এখন কৃষকের মুখে।
শেরপুরের বিএডিসি অফিস সূত্র জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষি উৎপাদনে ঝুঁকি বেড়েছে। উক্ত ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ কৃষি-উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের তহবিল থেকে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার খরস্রোতা চেল্লাখালী নদীর ওপর রাবার ড্রাম নির্মাণ করে। ২০১৬ সালের ১৪ মে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উক্ত রাবার ড্রামের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। প্রধান বক্তা ছিলেন তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী।
রাবার ড্রামের সামান্য উজানে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৫৯ হাজার ১২৪ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় হাইড্রোলিক স্ট্রাকচারের ওপর ৫ কিউসেক ক্ষমতাসম্পন্ন পরীক্ষামূলক সোলার ইরিগেশন পাম্পিং সিস্টেম। আর ঐ পাম্পের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকরা এখন সেচ সুবিধা পাচ্ছেন। আগামীতে বিদ্যুৎচালিত পাম্প ব্যবহার না করে স্বল্পখরচের সোলার পাম্প চালিয়ে তাদের ইরিগেশন কাজ করতে সহজ হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
সোলার প্ল্যান্ট সম্পর্কে স্থানীয় কৃষক আহসান আলী বলেন, চেল্লাখালী নদীর ওপর নির্মিত রাবার ড্রামসংলগ্ন সোলার প্ল্যান্ট হওয়ায় সেচ কাজে আমাদের খরচ অর্ধেকে নেমে এসেছে। আগে যেখানে প্রতি একর জমিতে সেচ খরচ হতো ৬-৭ হাজার টাকা। এখন আমরা সোলার প্ল্যান্টের সেচের মাধ্যমে তা ৩-৪ হাজার টাকার মধ্যে শেষ করতে পারছি। আরেক কৃষক মোহাম্মদ আলী বলেন, চেল্লাখালী রাবার ড্রাম এবং সোলার প্ল্যান্ট আমাদের কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা যোগ করেছে। আগে পাম্প ও বিদ্যুৎ নিয়ে সব সময় ঝামেলা পোহাতে হতো। এখন সোলার পাম্পটি চালু হওয়ায় আমাদের আর সেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না।
প্রকল্পের পাম্প হাউজের দায়িত্বে থাকা মন্টু মিয়া জানান, সোলার পাম্পটি টানা ছয় ঘণ্টা চালানো যায়। এটা যদি ১০ ঘণ্টা চালানো যায়, তাহলে কৃষকরা আরো বেশি সুবিধা পেতেন। প্রকল্পটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে এলাকার কৃষকদের সেচ সুবিধা আরো বাড়বে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (ক্ষুদ্র সেচ) শেরপুরের সহকারী প্রকৌশলী মো. মেহেদী আল বাকী জানান, ঐ প্রকল্পের আওতায় ১০টি ডিজেলচালিত, আটটি বৈদ্যুতিক মোটর ও একটি পাম্পহাউজের মাধ্যমে রাবার ড্রামের পানি ব্যবহারে প্রায় ১ হাজার কৃষক সেচসুবিধা পাচ্ছেন। সোলার পাম্প ও রাবার ড্রামের জমাকৃত ভূ-উপরিস্থ পানি পাওয়ায় আস্তে আস্তে কৃষকদের সেচসুবিধা বৃদ্ধি পাচ্ছে।