ডেস্ক নিউজ
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ বাস্তবায়ন করছে সরকার। এ জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে নিরাপত্তা সরঞ্জাম সংগ্রহ করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার (২৯ জুন) তুরস্কের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সরঞ্জাম কেনার চুক্তি করেছে বাংলাদেশ।
আংকারায় চুক্তি সই অনুষ্ঠানে তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুসদ মান্নান ও ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাশেদ ইকবালসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াতে সরকারের যে পরিকল্পনা, তার অংশ হিসেবে তুরস্কের সরকারি কোম্পানি রকেটসানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। রকেটসান স্থল, সুমদ্র ও আকাশে ব্যবহারযোগ্য ন্যাটোর মানদণ্ড অনুযায়ী অস্ত্র তৈরি করে থাকে। বিশ্বের ডিফেন্স কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২০১৯ সালে রকেটসানের অবস্থান ছিল ৮৯তম।
তুরস্ক ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট ইসমাইল ডেমির চুক্তি সইয়ের পর এক টুইটবার্তার বলেন, ‘রকেটসান থেকে বিভিন্ন সরঞ্জাম রফতানির জন্য দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। থেমো না, এগিয়ে যাও।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুসদ মান্নান বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) বাংলা ট্রিবিউনকে টেলিফোনে বলেন, ‘তুরস্কের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই কোভিড সময়েও প্রায় ১০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়েছে দুই দেশের মধ্যে, যা যেকোনও মানদণ্ডে ভালো বলা যায়।’
দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত সফর বিনিময় হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গত এক বছরে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তুরস্ক সফর করে বাংলাদেশের নতুন দূতাবাস উদ্বোধন করেছেন এবং তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় গিয়ে তাদের নতুন চ্যান্সারি কমপ্লেক্স উদ্বোধন করেছেন।’
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে ঢাকা সফরের সময়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভোসুগলোর বলেছিলেন, ‘আমাদের প্রতিরক্ষা পণ্যের গুণগত মান অত্যন্ত ভালো, দাম অত্যন্ত সুলভ। এগুলো কেনার জন্য কোনও শর্ত আরোপ করা হয় না। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশ এই সুবিধাগুলোর সুযোগ নেবে। এছাড়া, তুরস্ক প্রতিরক্ষা খাতে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও যৌথ উৎপাদনে রাজি আছে।’
রাষ্ট্রদূত মুসদ মান্নান বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ক্ষেত্রে প্রচুর প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও সম্পর্ক বাড়াতে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে।’
কী ধরনের এবং কত টাকার অস্ত্র কেনা হবে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্রয় করা হবে।’
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট-সিপরি’র তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ইতোমধ্যে তুরস্ক থেকে কোবরা এপিভি গাড়ি ও শর্ট-রেঞ্জ মিসাইল কিনেছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান কবে ঢাকা আসবেন জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং সফরটি মহামারি পরিস্থিতির ওপরে নির্ভর করছে। আমরা আশা করি, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর বছরেই তিনি ঢাকায় আসবেন।’
এদিকে আংকারার বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ’‘তুরস্কের সঙ্গে রাজনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে অগ্রগতি হচ্ছে।’
ওআইসির নেতৃত্ব স্থানীয় দেশ ও ন্যাটোর অংশীদার তুরস্কের সক্ষমতা বাড়ছে। বিশ্ব জনমত তৈরিতে দেশটি অগ্রণী ভূমিকা রাখছে বলেও জানান পররাষ্ট্র সচিব।