ডেস্ক নিউজ
একাধিক মেগা প্রকল্প উদ্বোধন হবে এ বছর । দ্রুত গতিতে চলছে প্রবৃদ্ধি সঞ্চালক পদ্মা বহুমুখী সেতুসহ ১০ মেগা প্রকল্প ও ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্মাণকাজ। সবকিছু ঠিক থাকলে সরকারের এই মেয়াদেই দেশের মানুষ এসব প্রকল্পের সুফল পেতে শুরু করবে। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখার ভিত্তি রচনার ক্ষেত্রে এই ১০ মেগা প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, যে গতিতে এ সব প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে তাতে আশা করা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পগুলো শেষ হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পাদিত গত ১০ বছরের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, সরকারের এই ১০ মেগা প্রকল্প হচ্ছে—পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্প, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্প, দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, কয়লাভিত্তিক রামপাল থার্মাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, পায়রা বন্দর নির্মাণ প্রকল্প এবং সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ প্রকল্প।
তবে আশার কথা চলতি বছরেই একাধিক মেগা প্রকল্প চালু হবার সুখবর আসছে। যোগাযোগ সেক্টরে সর্ববৃহৎ প্রকল্প পদ্মা সেতুসহ চারটি বড় যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণ শেষে চলছি বছরেই চালু করা হবে এমন প্রস্তুতি নিয়ে কাজ এগিয়ে চলছে। এ চার প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, কর্ণফুলী টানেল ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ইতিমধ্যে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, সরকারের যে দায়িত্বটি আমি পালন করছি সেখানে চারটি মেগা প্রজেক্ট আছে সেগুলো দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও কর্ণফুলী টানেলের কাজ এগিয়ে চলছে। চলতি বছরেই (২০২২ সাল) উদ্বোধন করতে পারব। ইতিমধ্যে বহুকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু ২০২১ সালের ২৯ আগস্ট। পরবর্তীতে মেট্রোরেল পরীক্ষামূলক যাত্রার পর ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলল। তবে যাত্রী নিয়ে চলবে চলতি বছরের বিজয় দিবস থেকে।
২০১৯ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ধীরে ধীরে অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে চলে যায় পুরো দেশ। এ অবস্থায় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের গতি কার্যত স্তিমিত হয়ে পড়ে। প্রকল্পের কাজ শেষ করা নিয়ে অনিশ্চয়তাও তৈরি হয়। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবার পর ঐ বছর অক্টোবর থেকে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রকল্পগুলোতে আবার পুরোদমে কাজ শুরু হয়। ৪১তম স্প্যান স্থাপনের মধ্য দিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর পুরো মূল কাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর। চলতি বছরের ৩০ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতু জন সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা রয়েছে।
অপর দিকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির অগ্রগতি ৭০ শতাংশের বেশি। টানেলটি নির্মাণে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে সরকার।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিল ২০১০-১৩ মেয়াদে। তবে কাজ শুরুই হয় ২০১৫ সালে। এখন শেষ করার মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের (২০২২ সাল) মধ্যে বিমানবন্দর থেকে বনানী হয়ে তেজগাঁও রেলগেট পর্যন্ত অংশটি চালু করা হবে।