ডেস্ক নিউজ
পলিটেকনিকের ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের প্রকৌশল এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগসহ অনার্স-মাস্টার্স করার সুযোগ দিতে উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার আকাক্সক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের কাছে চিঠিও দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, গাজীপুরের ডুয়েটে কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্য সেখানে ডিপ্লোমা করার পর ভর্তির সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও সরকার ৪ জেলায় ৪টি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ করবে। সেখানে এসব প্রতিষ্ঠানের ৫০ শতাংশ এবং বাকি ৫০ শতাংশ সরাসরি ভর্তির সুযোগ পাবে। এ কলেজগুলো বুয়েটের তত্ত্বাবধানে চলবে। এর ফলে প্রচুরসংখ্যক ডিপ্লোমা পাস করা শিক্ষার্থী বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার সুযোগ পাবে। এর বাইরেও সব প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ভর্তির পথ বের করার চেষ্টা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগের দাবিসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন করে। শিক্ষার্থীরা জানায়, বর্তমানে সারাদেশে প্রায় ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক এবং ৪৫০-এর বেশি বেসরকারি পলিটেকনিক রয়েছে। যেখান থেকে প্রতিবছর প্রায় হাজার হাজার ডিপ্লোমা প্রকৌশলী বের হয়; কিন্তু বেশির ভাগেরই পড়ালেখার যাত্রা এর পর থেমে যায়। বর্তমানে ৫শর বেশি পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য একই প্রতিষ্ঠান ডুয়েট। ডুয়েটের মতো এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় আর কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেনি সরকার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী
ডা. দীপু মনি আমাদের সময়কে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যে প্রতিষ্ঠানেই পড়ুক তার যদি উচ্চশিক্ষা নেওয়ার মেধা-যোগ্যতা থাকে, তা হলে সে সুযোগ যেন তারা পায়। সে কারণে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তিতে বয়সের বাধা তুলে দিয়েছি। আমি সব বিশ্ববিদ্যালকে দিঠি দিয়েছি, তারা যেন পলিটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেয়। ভর্তি পরীক্ষা দিয়েই ভর্তি হবে। যদি কোয়ালিফাই করে, তা হলে নেবে না কেন?’
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তির যোগ্যতা এইচএসসি। আর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হতে এসএসসি ও সমমান উত্তীর্ণ হতে হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ক্ষেত্রে এইচএসসি দুই বছর পেরিয়ে গেলে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পান না। এ কারণে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে চার বছরমেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স পাস করা শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ চাইলেও তা পান না। বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করেই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স ভর্তির বিষয়ে সুযোগ করে দিতে উদ্যোগ নেন।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের চিঠি দেন এসব শিক্ষার্থীর ভর্তির ব্যবস্থা নিতে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য চিঠি দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘পলিটেকনিকে হোক বিদেশে হোক- কোথাও তিন বছর চার বছর পড়ল। তার পর যদি সে সিদ্ধান্ত নেয় অনার্স করবে। এ বিষয়ে যদি তার মেধা-যোগ্যতা থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার- সে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যায়; তা হলে বলবে- উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার দুই বছর পর সে ভর্তি হতে পারবে না। এটা যৌক্তিক মনে করেন? যৌক্তিক নয়। আমরা সেই জায়গাতে যেতে চাই। আমি একা চাইলেও তো সব হবে না। এক লাফে তো সব পরিবর্তন করতে পারব না। আমরা আমাদের মতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।’