ডেস্ক নিউজ
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন হবে রোববার। এদিন ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিজয়ীদের হাতে তুলে দেয়া হবে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব পদক। অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বিজয়ীদের মাঝে পদক বিতরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারী অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখা পাঁচ বিশিষ্ট নারী পাচ্ছেন ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব পদক’। বঙ্গমাতার অবদানকে স্মরণীয় করার লক্ষ্যে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত সর্বোচ্চ জাতীয় পদক হিসেবে এটি প্রবর্তন করেছে সরকার।
‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ’ ক্যাটাগরিতে এবার পদক পাচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মমতাজ বেগম (মরণোত্তর); ‘শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়ায়’ টাঙ্গাইলের জয়া পতি (মরণোত্তর); ‘কৃষি ও পল্লি উন্নয়নে’ পাবনার কৃষি উদ্যোক্তা নুরুন্নাহার বেগম; ‘রাজনীতিতে’ কুমিল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ জোবেদা খাতুন পারুল এবং ‘গবেষণা’র ক্ষেত্রে নেত্রকোণার লেখক ও গবেষক নাদিরা জাহান (সুরমা জাহিদ)।
ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সম্মেলনকক্ষে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
প্রতিমন্ত্রী জানান, রোববার বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন হবে। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিজয়ীদের হাতে তুলে দেয়া হবে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব পদক।
এদিন গণভবন থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বিজয়ীদের মাঝে পদক বিতরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী পদকপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ১৮ ক্যারেট মানের ৪০ গ্রাম স্বর্ণ দিয়ে নির্মিত পদক, পদকের রেপ্লিকা, চার লাখ টাকার চেক এবং সম্মাননাপত্র তুলে দেবেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে পাকিস্তানি শাসন ও শোষণ থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে প্রতিটি পদক্ষেপ ও কার্যক্রম বাস্তবায়নে জাতির পিতার নেপথ্য শক্তি, সাহস ও বিচক্ষণ পরামর্শক হয়ে আছেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব।’
ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, ‘দেশপ্রেম, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, সাহসিকতা, ত্যাগ ও অনুপ্রেরণার উৎস বঙ্গমাতার জন্মদিবসকে সরকার ‘ক’ শ্রেণির জাতীয় দিবস ঘোষণা করেছে।’
সহায়তা পাচ্ছেন চার হাজার অসচ্ছল নারী
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নারীদের আর্থিক সাহায্য ও কর্মসংস্থান তৈরিতে বঙ্গমাতার ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে সকল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বিশেষ সহায়তা দেয়া হবে। ৬৪ জেলায় চার হাজার অসচ্ছল নারীকে সেলাই মেশিন ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দুই হাজার জন নারীকে দুই হাজার টাকা করে মোট ৪০ লাখ টাকা দেয়া হবে।
এদিন অনলাইনে বঙ্গমাতার জন্মস্থান গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নগদ টাকা ও সেলাই মেশিন বিতরণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘বঙ্গমাতা, সংকটে সংগ্রামে নির্ভীক সহযাত্রী’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এবার উদযাপন করা হবে দিনটি। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনগুলো বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপন করবে। এসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম বঙ্গমাতার সংগ্রামী জীবন, আত্মত্যাগ, সাহসিকতা, দেশপ্রেম, মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অপরিসীম অবদান এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের অজানা তথ্য জানতে পারবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দিবসটি উপলক্ষে জাতীয়ভাবে ক্রোড়পত্র ও পোস্টার প্রকাশ করা হবে। মহীয়সী নারী বঙ্গমাতার গৌরবময় কর্মজীবনের ওপর প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ ও স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সরাসরি সম্প্রচার করবে। বিটিভির মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সরাসরি সম্প্রচার করবে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও বেতারকেন্দ্র দিবসটির তাৎপর্য তুলে বঙ্গমাতার কর্মময় ও বর্ণাঢ্য জীবনের বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব সায়েদুল ইসলাম, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রাম চন্দ্র দাস, অতিরিক্ত সচিব ফরিদা পারভীন, জাতীয় মহিলা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক বেগম মাকসুরা নূর ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।